কাহালু (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ ডিবি পুলিশের অনুসন্ধান ও গ্রেফতারকৃত তিনজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বগুড়ার কাহালুতে অপহৃত কীর্তন গায়ক বিধান চন্দ্র সরকার (২০) এঁর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কাহালু উপজেলার শিবাকলমা গ্রাম থেকে প্রায় হাফ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে মাঠের মধ্যে মাটির নীচে পুতে রাখা বিধানের লাশ গতকাল শুক্রবার দুপুরে উদ্ধার করা হয। মধুপুর সাতকানিয়া গ্রামের রুহুল আমিনের জমির উপর দিয়ে যাওয়া ড্রেনের মাটি খুড়ে উদ্ধার করা গলিত এই লাশটি দেখে চিনবার উপায় নেই এটি বিধানের লাশ।
লাশ উদ্ধারের পর কলমা চারমাথায় প্রেসবিফিং করেন বগুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ¯িœগ্ধ আখতার। তিনি জানান, শিবা কলমা গ্রামের অনিল চন্দ্র সরকারের একমাত্র পুত্র বিধান। বিধান একজন ভালো কীর্তন গায়ক হিসেবে পরিচিত। গত ১১ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে বিধান বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে না আসায় ১২ এপ্রিল বিধানের পিতা অনিল চন্দ্র কাহালু থানায় একটি জিডি করেন। ওই জিডি মুলে কাহালু থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ অনুসন্ধান চালান।
বিধান নিখোঁজ হওয়ার দেড় মাস অতিবাহিত হবার পর কেউ কিছু এই বিষয়ে বুঝতে না পারায় মুক্তিপন আদায়ের জন্য অনিলের কাছে ফোন আসে। ওই ফোনের সুত্র ধরেই প্রযুক্তির সাহায্যে গত বৃহস্পতিবার রাতে বিধানের তিন সহপাটি একই গ্রামের বিদু চন্দ্রের পুত্র বিপুল চন্দ্র প্রাং (৩৫), জিতেন চন্দ্র বর্মনের পুত্র দিনেনশ চন্দ্র (৪১) ও যুক্তবাবু চন্দ্রের পুত্র উৎপল চন্দ্র (২৪)। গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
ডিবি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত স্বীকার করে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপন আদায়ের জন্য বিধানকে অপহরণ করা হয়। তাকে অপহরণ করে কাহালু উপজেলার সিমান্তবর্তী ভদ্রাখালের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। মুক্তিপন আদায়ের জন্য সেখানে বিধানকে মদ খাওয়ানোর পর তার মাথায় হাতুরী দিয়ে আঘাত করে অজ্ঞান করার জন্য। আঘাতটি খুবই গুরুত্বর দেখে তাকে ড্রেনের পানিতে চুবিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে গ্রেফতারকৃতরা। সেখানে ড্রেনের মাটি খুরে বিধানের লাশ পুঁতে রাখে খুনীরা।
পরদিন ভোরবেলা বিপুল সেখানে দেখতে যায় লাশ শেয়ার-কুকুর বের করেছে কি-না। লাশের একটি হাত বের হয়ে যাওয়া দেখে হাতটি আবার মাটি দিয়ে পুঁতে ফেলে। বিষয়টি দিনেশ ও উৎপলকে জানানোর পর ৪/৫ দিন পরে তারা তিনজন মিলে যেখানে লাশ পুঁতে রাখা হয়েছিলো সেখান থেকে কয়েক গজ দুরে মাটি খুঁড়ে লাশটি আবার ভালো করে পুঁতে রাখে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ¯িœগ্ধ আখতার জানান, গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। এই ঘটনার সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কি-না সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।
Leave a Reply