কাহালু (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার কাহালু উপজেলার পাঁচপীর মাজারে ওরশ মাহফিল ঘিরে ভক্ত-অনুসারীর পাশাপাশি হাজারো সাধারণ মানুষের সমাগম ঘটেছে।
প্রতি বছরের ন্যায় ওরশ মাহফিল উপলক্ষে পাঁচপীর মাজারের আশে-পাশের প্রায় ১০ টি গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনের সরব উপস্থিতি মাজার সরগরম হয়ে উঠেছে। মাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে মেলা জমে উঠেছে বিশাল এলাকা জুড়ে। মেলায় শিশুদের জন্য রাখা হয়েছে নাগরদোলা, চরকি, নৌকাসহ বিভিন্ন বিনোদন মূলক আয়োজন।
গত শনিবার ও রোববার (১ ও ২ ফেব্রæয়ারি) দুদিনব্যাপী এই ওরশ মাহফিলের জন্য দূর-দুরান্ত থেকে এসেছেন অসংখ্য ভক্ত-অনুসারী। মাজার কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মাজারে ওরশ মাহফিলে আগত মুসল্লীদের জন্য মহিষ জবাই করা হয়েছে। অন্যান্য বছর প্রায় ৩০ মন চালের পোলাও রাঁন্না করা হলেও এবার জনসমাগম বেশি হওয়ায় প্রায় ৫০ মন চাল লাগতে পারে।
ঈদ ও পূজা-পার্বনের মতোই এই অঞ্চলের মানুষের কাছে পাঁচপীর মাজারের ওরশ মাহফিল একটি বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান। যারফলে ওরশ মাহফিল উপলক্ষ্যে এই অঞ্চলের ধনী-গরীব সকলেই তাদের নিকট আত্মীয়-স্বজনকে নিমন্ত্রণ করেন। ওরশ মাহফিল উপলক্ষে অনুষ্ঠিত মেলায় কেনাবেচাও বেশ জমজমাট।
উল্লেখ্য যে, কাহালুর দূর্গাপুর ইউনিয়নের ফকির এলাকায় তালোড়া-পাঁচপীর রেল স্টেশনের মাঝামাঝি পথে এই মাজারটি। বিভিন্ন সুত্রের তথ্যমতে এই মাজার এলাকা ছিল এক সময় প্রত্যাপ নারায়ণ জমিদারের কাচারি। প্রত্যাপ নারায়ণ জমিদারের আমলে এখানে পীরজাদা মোঃ আহমদুল্লাহ এই অঞ্চলে ইসলাম প্রচারে আসেন। পরে তাঁর নিশানা অনুস্মরণ করে আরও চারজন পীরজাদা এখানে আসে।
জনশ্রæতি রয়েছে জমিদার প্রত্যাপ নারায়ণ ইসলাম প্রচারে বাঁধা দেওয়ায় উল্লেখিত পাঁচপীর ও তাদের অনুসারীদের মধ্যে একটি যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে নিশ্চিত পরাজয় জেনে প্রত্যাপ নারায়ণ পালিয়ে যান। এই কথাগুলো এলাকার মানুষ কল্পকাহিনীর মতো বলে থাকেন। তবে ১৯৫২ সালে উঁচু ঢিবি সমতল করার সময় স্থানীয়রা সানবাঁধা কবরের সন্ধান পান। তখন মোহাম্মদ ফরিদি নামের একজন বুজর্গ ব্যক্তি এসে মোরাকাবা ও মুশাহেদী করে জানতে পারেন এখানে পাঁচজন পীর শায়িত আছেন।
তখন থেকেই মানুষ বিপদে-আপদে পড়ে এখানে মানুষ ছিন্নি দিতে আসেন। পরবর্তীতে ভক্ত-অনুসারীরা মিলে এখানে ওরশ মাহফিলের প্রচলন শুরু করলে তা এখন পর্যন্ত সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে।
Leave a Reply