1. sonatalasangbad@gmail.com : সোনাতলা সংবাদ :
শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সোনাতলায় অগ্নীকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ভ্যান চালককে গরু দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান টুল্লু সোনাতলায় নাম্বার বিহীন ট্রাকের যন্ত্রাংশ আলাদা করার সময় দুইজন আটক বগুড়ায় ধান কেটে মজুরি না পাওয়ায় ৫ দিনমজুরের থানায় অভিযোগ গাবতলীর বাগবাড়ীতে শহীদ জিয়া কলেজ সরকারীকরণের দাবীতে লিফলেট বিতরণ কাহালুতে আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেফতার কাহালুতে দুই ব্যবসায়ীকে ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা বগুড়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষা শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সোনাতলায় ১০২ মুক্তিযোদ্ধাকে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চিঠি সারিয়াকান্দিতে জমিজমা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৫ জন আহত সোনাতলায় এক সন্তানের জননীকে নিয়ে যুবক উধাও, থানায় অভিযোগ

কাহালুর নারহট্ট কাচারি বাড়ির ইতিবৃত্ত

  • বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫
  • ২৭
filter: 0; jpegRotation: 0; fileterIntensity: 0.000000; filterMask: 0; module:1facing:0; hw-remosaic: 0; touch: (-1.0, -1.0); modeInfo: ; sceneMode: Hdr; cct_value: 0; AI_Scene: (-1, -1); aec_lux: 129.0; hist255: 0.0; hist252~255: 0.0; hist0~15: 0.0;

মুনসুর রহমান তানসেন, কাহালু (বগুড়): নারহট্ট কাচারি বাড়ি তরফ রায় চৌধুরী জমিদারি আমলের একটি অংশ। এখানে তরফ রায় চৌধুরী জমিদারের কোনো বসতি ছিলনা, শুধু খাজনা আদায়ের জন্য এই কাচারি বাড়িটি ছিল। নায়েব ও জমিদারের কর্মচারীরা এখানে বসে প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করতেন। জমিদারি আমলের এই কাচারি বাড়ির স্থাপনাগুলো বর্তমানে নেই। তবে এই কাচারি বাড়ির অংশ জুড়েই নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে ইউনিয়ন ভ‚মি অফিস।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহাসিক এই কাচারি বাড়ি ময়মনসিংহের গৌড়িপুর ও কালিপুরের জমিদারদের ছিল। নারহট্ট কাচারি বাড়ি পরিচালিত হতো জমিদারের নায়েব ও কর্মচারীদের দ্বারা। এখানে কাচারি বাড়িটির স্থাপনা ছিল মাটির। সেই কাচারি বাড়ির মাটির স্থাপনা খানিকটা থাকলেও বেশিরভাগই ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানেই নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে নারহট্ট ইউনিয়ন ভ‚মি অফিস। ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসের পূর্ব পাশে প্রাচীনকালের সানবাঁধা পুকুরটি কাচারির পুকুর নামে পরিচিত।

প্রবীণ ব্যক্তি নারহট্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বিমল কুমার সরকার জানান, এই পুকুরের দক্ষিণ পাশে যে মন্দির প্রাঙ্গন আছে, তা প্রাচীনকালের জমিদারগণের। তৎকালীন সময়ের কালিমন্দির, দূর্গামন্দির, হরিমন্দির ও শিবমন্দির কালের বিবর্তনে শ্রীহীন হয়ে পড়লেও সেখানেই নতুন করে মন্দিরগুলো সংস্কার ও পূর্ণ নির্মাণ করা হয়েছে। সেই মন্দিরেই পূজা-আর্চনা করা হয়ে থাকে এবং প্রতি বছর ফাল্গুন মাসে বড় আকারে হরিবাসরের আয়োজন করা হয়।পুকুরের উত্তর পাড়ে ছিল জমিদারের ডাকবাংলো। সেখানে বিচার-শালিসের কার্যক্রম চলতো। সেই বাংলোটি এখন আর নেই।

জমিদারি আমলে কাচারি বাড়ির মাঠে বৈশাখ মাসে মেলা বসতো। সেই মেলায় হালখাতার মতো করে জমিদারের নায়েব ও কর্মচারীরা প্রজাদের আমন্ত্রণ করতেন। মূলত বকেয়া খাজনা আদায়ের জন্য এবং প্রজাদের আপ্যায়নের উদ্দেশ্যে এই মেলার আয়োজন করা হতো। সেই মেলাতে দলে দলে প্রজারা এসে বকেয়া খাজনা দিয়ে জমিদারের কর্মচারীদের দেওয়া কদমা খাজাসহ নানা প্রকারের মিষ্টান্ন নিয়ে বাড়িতে যেতো। এই মিষ্টান্ন দেওয়া হতো উপহার হিসেবে রঙিন নতুন পাতিলের ভিতর। এই মেলার জন্যই এখানকার প্রথম নামকরণ হয়েছে ’নরহট্ট’। পরে ’নরহট্ট’ থেকে ’নারহট্ট’ নামকরণ করা হয়। এখানে বুঝানো হয়েছে ’নর’ অর্থ ’মানুষ’ আর আগত মানুষের সমাগমকে ’হাট’। সেই নরের হাট থেকে ’নারহট্ট’ নামে পরিচিতি লাভ করে এই কাচারি বাড়ি।

নারহট্ট ভেঁপড়ায় প্রাচীন একটি কালিমন্দির এখনো আছে। কালিমন্দির ঘিরে প্রাচীনকাল থেকে প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম বুধবার নিশানের মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সেই মেলায় বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়া থাকলেও প্রাচীনকালের মত লাটি খেলা, চড়ক খেলা, পাতা খেলা ও নিশান খেলা এখনো হয়ে থাকে। জমিদার আমল থেকে দরগাহাট পুকুরের পশ্চিম পাড় মহাশ্মশান হিসেবে এখন পর্যন্ত তা ব্যবহার হয়ে আসছে। জমিদারি আমলের এখানে আলতাফ আলী চৌধুরী চিকিৎসালয় ছিল। সেই চিকিৎসালয় বর্তমানে ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র করা হয়েছে।

সূত্রমতে, ১৯০৮ সালে নারহট্ট ও দুর্গাপুরে একই দিনে জে. এম. মিত্র মাইনর ইংলিশ স্কুল নামে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন জে. এম. মিত্র নিজেই। পরবর্তী সময়ে নারহট্ট স্কুল বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। এই জে. এম. মিত্র ছিলেন তরফ রায় জমিদার বংশের নিকট আত্মীয়। জমিদারি আমলে এই কাচারি বাড়ি পর্যাক্রমে উপেন্দ্র রায় কিশোর চৌধুরী, ব্রজেন্দ্র রায় কিশোর চৌধুরী ও রামরঙ্গিনী দেবীসহ তাদের বংশধরের অধীনে ছিল। এখানে উল্লিখিত উপেন্দ্র রায় কিশোর চৌধুরীর পুত্র, চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায় বলে জনশ্রæতি রয়েছে।

বিভিন্ন সংবাদপত্র ও অনলাইন পোর্টালে গৌড়িপুর ও কালিপুর জমিদার বাড়ির ইতিহাস সংক্রান্ত অসংখ্য প্রতিবেদন রয়েছে। এই কাচারি বাড়ির উল্লিখিত অংশীদার সকলেরই নাম পাওয়া যায় সেই প্রতিবেদন গুলোতে। তবে সেই প্রতিবেদনে নারহট্ট কাচারি বাড়ির কথা উল্লেখ না থাকলেও গৌড়িপুর, রামগোপালপুর ও কালিপুর জমিদার বংশের লোকজনই এই কাচারি বাড়ি পরিচালনা করেছেন সেটা অনেকটা সত্য বলেই ধারনা করা যেতে পারে। কারণ উল্লিখিত প্রতিবেদনে বগুড়ার শেলবর্ষ পরগনার অংশীদার ও আদমদিঘীর কড়ই রাজবাড়ির অংশীদার হিসেবে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ রয়েছে।

অপরদিকে বগুড়ার ইতিহাস গ্রন্থের ৯৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে নারহট্ট কাচারির কথা। সেখানে বলা হয়েছে, এখানে গৌড়িপুর, রামগোপালপুর প্রভৃতি জমিদারগণের কাচারি বাড়ি ছিল। জমিদার আমলের একটি পোস্ট অফিস, ও দাতব্য ঔষধালয় আছে এবং এখানকার হাট প্রসিদ্ধ। গৌড়িপুর, রামগোপালপুর, কালিপুর জমিদার বংশের ইতিহাস ও বগুড়ার ইতিহাস গ্রন্থের তথ্যের সাথে অনেকটা মিলে যায় প্রবীণ ব্যক্তি বিমল সরকার ও নারহট্ট এলাকার মানুষের কথা। এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে অনুমান করা যেতে পারে নারহট্ট কাচারি তরফ রায় চৌধুরী জমিদারির অংশ ছিল। পর্যায়ক্রমে গৌড়িপুর, কালিপুর ও রামগোপালপুরের জমিদারগণও এই কাচারী পরিচালনা করেছেন বলে সহজেই অনুমেয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নিউজে সর্বশেষ

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট