কাহালু (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ গত মঙ্গলবার রাতে বগুড়ার কাহালু থানা ও পৌর বিএনপির ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রকাশ করার পর আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। পদবঞ্চিত সাবেক পাঁচজন ভিপি, সাবেক ছাত্রদল নেতাসহ সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভুমিকা রাখা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন কাহালু থানা ও পৌর বিএনপি এখন এমপি আলহাজ্ব মোশারফ হোসেনের পকেট কমিটি হয়েছে।
সাবেক ভিপি ও বিএনপি নেতা আইনুল ইসলাম জানান, বিএনপি নেতাকর্মীদের উজ্জিবিত করতে আমি সাবেক এমপি ডাঃ জিয়াউল হক মোল্লার শোডাউনে গিয়েছিলাম। ওই শোডাউনের ভিডিওতে যারা ছিলেন, তাদেরকে এমপি মোশারফ হোসেন কোন পদ রাখেনি।
সাবেক ভিপি ও বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান তালুকদার পুটু জানান, যারা শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসী ও সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভুমিকা রাখেন, তাদের যোগ্যতা থাকার পরেও ইউনিয়ন ও থানা কমিটিতে রাখা হয়নি। তাঁরমতে সাবেক এমপি ডাক্তার জিয়াউল হক মোল্লার সাথে যাদের সম্পর্ক রয়েছে তারা যাতে কোন কমিটিতে থাকতে না পারেন সেই কাজটিই করছেন বর্তমান এমপি মোশারফ হোসেন।
কাহালু থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর রাম মোহন্ত জানান,বর্তমান এমপি আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন তাঁর নিজের লোক ছাড়া কাউকে থানা ও পৌর বিএনপির কমিটিতে রাখেনি। তিনি সব জায়গায় নিজের লোক দিয়ে পকেট কমিটি করেছে।
সাবেক ভিপি ও থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আঃ মান্নান জানান, এমপি মোশারফ ও বিএনপির সভাপতি তাদের নিজের লোক দিয়ে কমিটি পুরুণ করেছে। ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে এমপি মোশারফের পকেট কমিটি করা হয়েছে।
সাবেক ভিপি, সাবেক থানা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাবেক যুবদলের আহবায়ক জিল্লুর রহমান জানান, কাহালু থানা ও পৌর কমিটির টেন্ডারবাজীর মত করে করা হয়েছে। সম্মেলনের আগে মনোনয়ন ফরমের মুল্য করা হয়েছিলো মোটা অংকের টাকা। বিভিন্ন পদে প্রতিদ্বন্দিতা করতে যাতে কেউ না পারেন সেই রকম পরিস্থিতি তৈরী করা হয়েছিলো।
এমপি মোশারফ হোসেনের লোক ছাড়া যারা মনোনয়ন ফরম যারা নিয়েছিলো তাদের কাছ থেকে সিডিউল ম্যানেজ করার মত মনোনয়ন ফরম নেওয়া হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাখা হয়নি সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভুমিকা রাখা, বর্তমান সরকার আমলে মামলার আসামী হওয়া অনেক ত্যাগী নেতাদেরকে। থানা ও পৌর বিএনপি বর্তমানে এমপি মোশারফের পকেট কমিটি।
সাবেক ভিপি ও থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজনুর রহমান জানান, বিএনপির জনপ্রিয় সাবেক এমপি ডাঃ জিয়াউল হক মোল্লার সাথে যাদের যোগাযোগ রয়েছে তাদের কাউকে কমিটিতে না রেখে বর্তমান এমপি মোশারফ হোসেনের নিজের লোক দিয়ে পকেট কমিটি করা হয়েছে।
থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মোহন জানান, শহীদ জিয়ার আদর্শে বিশ্বাসীদের কোন মুল্য দেওয়া হচ্ছেনা। বর্তমান এমপি মোশারফের লোক ছাড়া কাউকে কমিটিতে রাখা হয়নি।
বীরকেদার ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ খিদির হায়াত মুছা জানান, মোশারফ এমপি বিএনপির পরীক্ষিত নেতাকর্মীকে কোনঠাসা করে বিএনপিকে ধ্বংস করছেন। পদবঞ্চিত যারা এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলেছেন তাঁরা সকলেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক হয়ে লাভ নেই, এমপি মোশারফ নিজের লোক ছাড়া কমিটিতে জায়গা নেই।
এব্যাপারে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও কাহালু-নন্দীগ্রাম এলাকার এমপি আলহাজ্ব মোশারফ হোসেনের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, আমরা সবাই জিয়া পরিবারের লোক। পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার ক্ষেত্রে কে কার লোক সেই হিসেব করা হয়নি। া দলীয় কাজে সক্রিয় তাদেরকে সমন্বয় করে কমিটি জায়গা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া থানা ও পৌর বিএনপির সভাপতি/সম্পাদক মিলেই পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্যদের নাম দিয়েছে। সবাইকে
এব্যাপারে থানা বিএনপির সভাপতি ফরিদুর রহমান ফরিদের সাথে সাক্ষাত করা হলে কমিটির বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারবো না। মোবাইল ফোনে থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন আজাদের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, সাক্ষাতে কথা হবে, এখন এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে পারবো না।
উল্লেখ্য যে, আগামী ২ নভেম্বর বগুড়া জেলা বিএনপির সম্মেলনকে সামনে অনুমোদিত কাহালু থানা ও পৌর বিএনপি পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্যদের নামের তালিকা গত ১৮ অক্টোব্বর রাতে প্রকাশ করা হয়। কমিটির তালিকা প্রকাশের পর থেকে গতকাল বুধবার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
Leave a Reply