বায়েজীদ গাইবান্ধা: উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতে গাইবান্ধার চার উপজেলার ২০ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ১০ হাজার পরিবারের ৪০ হাজার মানুষ।
তীব্র স্রোতে ভাঙন দেখা দিয়েছে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও করতোয়া নদীতীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায়। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে শহর রক্ষাবাঁধ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ বহু সরকারি স্থাপনা। ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টর জমির পাট, কাউন ও সবজি ক্ষেত। কিছু কিছু নিম্নাঞ্চলের কাঁচা সড়কসহ তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বন্যা আর ভাঙন দুইয়ে মিলে চরম দুর্ভোগ ও আতঙ্কে অনেকে বসতভিটা সরিয়ে নিচ্ছেন। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে আশ্রয়কেন্দ্রসহ উঁচু স্থানে ছুটছেন কেউ কেউ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঘাঘট নদীর পানি শহর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ও করতোয়ার পানি ১১৩ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোলরুমের দায়িত্বরত অপারেটর খায়রুন্নাহার বেগম।
জেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পানির প্রবল স্রোতে সদর উপজেলার গোঘাট, সৈয়দপুর, লঞ্চঘাট ও কামারজানি বন্দর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আরও প্লাবিত হয়েছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলসহ শ্রীপুর, বেলকা, কাপাসিয়া, চণ্ডিপুর ও তারাপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম।
ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদের পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পাওয়ায় পানি ঢুকে পড়েছে ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর, উড়িয়া, গজারিয়া ও এরেন্ডাবাড়িসহ কয়েকটি ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলোতে। তাছাড়া সাঘাটা উপজেলার পবনতাইড়, মুন্সিরহাট, বাঁশহাটা ও হলদিয়াসহ প্রায় ২০টির বেশি গ্রামের মানুষ বন্যার কবলে পড়েছে।
ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের মধ্য উড়িয়া গ্রামের আবদুল হাই বলেন, ‘এই বয়সে তিন ফিরে বাড়ি পাল্টাইছি। আবার যে, নদী ভাঙতিছে; এবার কোটে যাম। এই বন্যা আসছে; সব পাকেই কষ্ট। কোটে যাম; কি করমো আর কি-বেই খাম।’
একই গ্রামের পল্লি চিকিৎসক আমজাদ আলী বলেন, ‘একে একে চারবার ঘর-বাড়ি নদীত বিলীন হয়া গেছে। বাড়ি পিছেতে পিছেতে শেষ মাতাত আসি ঠেকছি এবার। এখন যেহারে পানি বাড়তিছে; আর এক ফুট পানি বাড়লে এলাকা ছাড়ি যাতে হবে। আর কোটেই বা যাব; যাওয়ার মতো কোথাও জায়গাও নাই।’
বালাসীঘাটের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এলাকার কাইয়ারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যার পানিতে ডুবেছে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যেকোনো সময় পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বিদ্যালয়সংলগ্ন কাইয়ারহাট গুচ্ছগ্রামটি ।
গুচ্ছগ্রামে আশ্রয় নেয়া মর্জিনা বানু বলেন, ‘বন্যের পানি আসতিছে। ঘরকোনা তো ডুবি যাবি। কোটে যামো; কি খাম। চেয়ারম্যান-মেম্বর তো খোঁজও নিলে না।’
বালাসীঘাট এলাকার হাফিজ মিয়া বলেন, ‘হু হু করে পানি বাড়ছে। চরের সব এলাকা ডুবছে। পুকুরের মাছ, জমির ফসল, বাড়িঘর, গাছপালা সব বানের পানি নিয়ে যাচ্ছে।’
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু রায়হান বলেন, ‘সরকারিভাবে সদর উপজেলায় ২টি ও সাঘাটা উপজেলার ১টি আশ্রয়কেন্দ্রে চার শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় অনেক এলাকায় যোগাযোগ ভেঙে পড়েছে। বিশেষ করে দুর্গত এলাকার মানুষজন তাদের গবাদি পশু নিয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন।’
বন্যা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এস এম ফয়েজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘চার উপজেলার বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ৮০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তালিকা করে এসব চাল বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউএনওদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক অলিউর রহমান বলেন, ‘বন্যাকবলিত মানুষদের বিতরণের জন্য ৮ হাজার শুকনা খাবারের প্যাকেট মজুত রয়েছে। পাশাপাশি প্রস্তুত রয়েছে চার শতাধিক তাঁবু। এ ছাড়া স্থায়ী ১০টিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, মেডিক্যাল টিম এবং বেশ কিছু নৌকাও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
Hello! Would you mind if I share your blog with my zynga group?
There’s a lot of people that I think would really appreciate your
content. Please let me know. Thanks
Have you ever thought about writing an e-book or guest authoring
on other blogs? I have a blog based upon on the same information you discuss and would love to have
you share some stories/information. I know my visitors would appreciate your work.
If you are even remotely interested, feel free to send me an email.
This text is invaluable. How can I find out more?
Can you tell us more about this? I’d like to find out more details.