বগুড়া প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা দেশব্যাপী কমপ্লিট শাটডাউনে বগুড়া আবারও রণক্ষেত্র হয়েছে। দিনভর পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়েছে সাধারন শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের ইটের টুকরোর জবাবে বৃষ্টির মত রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
রাবার বুলেটের আঘাতে অনেক শিক্ষার্থীর শরীর ক্ষত বিক্ষত হয়েছে। গুলিতে দুইজন শিক্ষার্থীর চোখ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে, হতাহতের সঠিক কোন তথ্য কেউ দিতে পারেনি। দুজন পুলিশ সদস্য হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
প্রথমে বনানীতে ঢাকা-বগুড়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। সেখানে পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা হয়। পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের দমানোর চেষ্টা চালায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরকারি আজিজুল কলেজের সামনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। শিক্ষার্থীরা ইট পাটকেল ছুঁড়ে পুলিশের হামলার জবাব দিতে থাকে। বেশকিছু সময় এভাবে চলার পর শিক্ষার্থীরা পিছু হটে যায়।
একপর্যায়ে চারিদিক থেকে শিক্ষার্থীরা শহরের জিরোপয়েন্ট সাতমাথায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশি বাধা অতিক্রম করে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করতেই বুলেট ছুঁড়তে থাকে পুলিশ। ইটের টুকরো মেরে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করে শিক্ষার্থীরা। এসময় মুহুর্মুহু টিয়ারসেল ও রাবার বুলেটের আঘাতে আহত হতে থাকে শিক্ষার্থীরা।
এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পরে বিভিন্ন দিক থেকে আবারও শিক্ষার্থীরা সাতমাথায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় পুুলিশ তাদের সরে যেতে বললে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ছুঁড়ে। এ সময় শিক্ষার্থীরা নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে পাল্টা ইটপাটকেল ছোড়ে। এরপর থেকে সাতমাথা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। একই সময়ে সাতমাতার চারিদিক থেকে শিক্ষার্থীরা সামনে এগুনোর চেষ্টা করলে পুলিশ বৃষ্টির মত টিয়ারসেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড মারতে থাকে। শেরপুর রোড, স্টেশন রোড, গোহাইল রোড, জেলখানা রোড এবং ২য় রেলঘুমটি এলাকা দিয়ে বারবার সাতমাথায় যাওয়া চেষ্টা চালায় শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভে স্কুল-কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি দেখা গেছে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সদর থানার পাশে ২য় রেলঘুমটি এলাকায় পুলিশের সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলছিল। বিক্ষোভকারীরা জানায়, দিনভর সংঘর্ষে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করেছে। তবে, পুলিশের পক্ষ থেকে আটকের কোন তথ্য সাংবাদিকদের দেওয়া হয়নি।
পুলিশের দুজনের একজনের নাম সার্জন জিয়া। তার মোটরসাইলকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এসময় ওই পুলিশের গায়ের পোশাক খুলে লাঠির অগ্রভাবে বেঁধে ঘুরায় শিক্ষার্থীরা। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার বলেন, অনাকাংখিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।
সোনাতলা সংবাদে লিখতে পারেন আপনিও। যে কোনও তথ্য ও ভিডিও দিন নিচের WhatsApp নাম্বারে। প্রয়োজনে আপনার নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মোবাইল: ০১৭৭৪৬৫০৬৭১
E-mail: sonatalasangbad@gmail.com