সোনাতলা সংবাদ ডেস্কঃ চট্টগ্রাম থেকে বগুড়া বাফারে আসার পর জব্দ হওয়া সাত ট্রাক টিএসপি সার পরীক্ষায় ভেজাল প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাকের চালকসহ ১৩ জনকে আটক করেছে র্যাব-১২। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাফার গুদাম থেকে তাদের আটকের পর মামলা করা হয়। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ১৩ জন হলেন ঢাকার সাভার থানার বনিয়ারপুরের নুর হোসেন (২৬), একই থানার নগরকোণ্ডা এলাকার শাকিল (৩১), তারেক (১৯), সাকিল (৩২), হানিফ (৩২), সাভার থানার বলিয়াপুরের এলাকার আব্দুল আউয়াল (৫০), আবুল বাশার (২৮), জসিম (২৬), সোহেল (৩৫), আসাদুল (২৬), বাবু (২৫), রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কয়রাবতী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম(১৮) ও মানিকগঞ্জ দৌলতপুরের মানিকগঞ্জ গ্রামের শাহ আলম (৪৩)।
জানা যায়, গত সোমবার বগুড়ায় বাফার গুদামে সার খালাসের আগে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ট্রাক টিএসপি সার নমুনা পরীক্ষার জন্য রাজশাহী মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ল্যাবে পাঠানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার পরীক্ষায় সারগুলো ভেজাল হিসেবে প্রমাণিত হয়। রাতে পরীক্ষার প্রতিবেদন বগুড়া পৌঁছালে ১৩ জনকে আটক করে র্যাব-১২।
এই ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা টিএসপি কমপ্লেক্সের ম্যানেজার (প্রশাসন) মাজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর আটক ১৩ জনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
আজ শুক্রবার র্যাবের প্রেস ব্রিফিংয়ে বগুড়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার তৌহিদুল মবিন খান জানান, গত ২৭ আগস্ট চট্টগ্রামের পতেঙ্গা টিএসপি কমপ্লেক্স থেকে সারগুলো বগুড়া বাফার গুদামের উদ্দেশে রওনা দেয়। এরপর যাত্রা বিরতিকালে সাভারের হেমায়েতপুরে ট্রাকে থাকা টিএসপির সার সরিয়ে ভেজাল সার তুলে দেওয়া হয়। এ সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজসহ যাবতীয় প্রমাণ র্যাবের হাতে আসলে বিষয়টি বগুড়া জেলা প্রশাসককে জানানো হয়। পরে তার নির্দেশে সার খালাস প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়।
এদিকে, ভেজাল সারের বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিসিআইসি ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে টিএসপি কমপ্লেক্সে থেকে বগুড়ায় পাঠায়। তারা পরীক্ষার জন্য ১৮টি ট্রাক থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। অপর দিকে বাফার কর্তৃপক্ষ গত সোমবার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী মৃত্তিকা সম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠায়। রাজশাহী মৃত্তিকা গবেষণা ইনস্টিটিউটে ও চট্টগ্রাম টিএসপি কমপ্লেক্সে সাত ট্রাকের নমুনা পরীক্ষার ফল আসলে দেখা যায় সারগুলো ভেজাল।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক জিয়াউল ইসলাম জানান, সার নিয়ে নোনো কারসাজিই সহ্য করা হবে না। যারা এই প্রক্রিয়ার জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনিব্যবস্থা নিতে তিনি বগুড়ার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা জানান, মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। অন্য কেউ এই ঘটনায় জড়িত কিনা তা তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে।
Leave a Reply