সোনাতলা সংবাদ ডেস্কঃ হিরো আলমের নিউজ করায় মাতাল অবস্থায় এক যুবলীগ নেতা দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা করে তাদের মারধর করেছেন। এর আগে আরও এক সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছেন তিনি। এ ছাড়াও হিরো আলমের সঙ্গে ছবি ফেসবুকে পোস্ট করায় এক চিকিৎসক নেতাকে মারধরের হুমকি দেন এবং আরও এক সাংবাদিককে মারধর করার জন্য খুঁজছেন ওই যুবলীগ নেতা। যুবলীগের ওই নেতার নাম শরিফুল ইসলাম শিপুল। তিনি বগুড়া জেলা যুবলীগের সহসভাপতি।
গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বগুড়া শহরের টেম্পল রোডে জেলা আওয়ামী লীগ অফিস সংলগ্ন টাউন ক্লাবে এই হামলার ঘটনা ঘটে।মাধরের শিকার দুই সাংবাদিক হলেন বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কালের কণ্ঠের বগুড়া প্রতিনিধি জে এম রউফ এবং দৈনিক বগুড়ার সিনিয়র রিপোর্টার জহুরুল ইসলাম।সুত্র- কালবেলা
হামলার শিকার রউফ জানান, তিনি টাউন ক্লাবের অফিসে (ক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে) বসে উপনির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী হিরো আলমের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলনের নিউজ লিখছিলেন। সে সময় ওই কক্ষে ছিলেন দৈনিক কালবেলার বগুড়া ব্যুরো প্রধান প্রদীপ মোহন্ত ও দৈনিক বগুড়ার জহুরুল ইসলাম ছাড়াও তার আরও দুই বন্ধু। রাত সাড়ে ১১টার দিকে যুবলীগ নেতা শিপুল মদ্যপ অবস্থায় সেখানে প্রবেশ করেন। তিনি (রউফ) সে সময় হিরো আলমের সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও তার পত্রিকার মেইলে দিয়েছেন মর্মে মোবাইলে অফিসকে অবহিত করছিলেন। এটি শুনেই ক্ষিপ্ত হয়ে অশালীন ভাষায় গালাগাল শুরু করেন শিপুল। ‘সাংবাদিকরা হিরো আলমকে রাজনীতিক বানাচ্ছে’ এমন অভিযোগ তুলে তিনি রউফের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর শুরু করেন। সেখানে উপস্থিত অন্যরা রউফকে উদ্ধার এবং শিপুলকে ওই অফিস থেকে বের করে দেন। তার পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে শিপুল আবারও সেখানে প্রবেশ করে সাংবাদিক জহুরুলের ওপর চড়াও হয়। তিনি জহুরুলের গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যার চেষ্টা চালান। সে সময় তাদের চিৎকারে টাউন ক্লাবের কর্মচারীরাসহ বাইরের কয়েকজন লোক গিয়ে শিপুলকে নিবৃত্ত করে।যমুনা টেলিভিশনের বগুড়া ব্যুরো প্রধান মেহেরুল সুজন বলেন, বুধবার রাত ৯টার দিকে তিনি সাতমাথায় উপনির্বাচনের ফলাফল নিয়ে লাইভ করছিলেন। এ সময় শিপুল তাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। সুজন বলেন, শিপুল ও তার কয়েকজন সহকর্মী সেখানে অবস্থান করছিলেন। তারা সবাই মদ্যপ থাকায় নিজের সম্মান রক্ষার্থে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে।
বগুড়া প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি ও নিউজ টোয়েন্টিফোরের বগুড়া প্রতিনিধি আব্দুস সালাম বাবু বলেন, দুই দিন আগে তাকেও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন শিপুল। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, হিরো আলমকে নিয়ে টেলিভিশনে সংবাদ প্রচার করায় শিপুল ক্ষুব্ধ হয়ে এমন আচরণ করেন।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি ডা. সামির হোসেন মিশু জানান, বুধবার রাত ১১টার দিকে শিপুল শহরের সাতমাথায় আমার পরিচিতজনদের সামনে আমাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং সাতমাথায় পেলে মারধর করবে বলে বেড়ায়।
বগুড়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা বলেন, শিপুল আরও একজন সাংবাদিক খুঁজে বেড়াচ্ছেন মারধর করার জন্য। এদিকে গতকাল রাতে ঘটনার পর থেকে শিপুল আত্মগোপন করেন। পুলিশ রাতেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাকে ধরতে পারেনি।
বগুড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশিষ পোদ্দার লিটন বলেন, দুঃখজনক ঘটনার জন্য আমরা লজ্জিত। শিপুলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এদিকে বগুড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারাসহ ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়ার পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে ঘটনাগুলো জানান। পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করে বলেন শিপুলকে ধরতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
সোনাতলা সংবাদে লিখতে পারেন আপনিও। যে কোনও তথ্য ও ভিডিও দিন নিচের WhatsApp নাম্বারে। প্রয়োজনে আপনার নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মোবাইল: ০১৭৭৪৬৫০৬৭১
E-mail: sonatalasangbad@gmail.com