গোলাম রব্বানী শিপন, মহাস্থান (বগুড়া) থেকেঃ বেঁচে থাকার জন্য এখন নিত্যপণ্যের সাথে মানুষের যোদ্ধ করে টিকে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
সাধারণ মানুষের কাছে এখন এক আতঙ্কের নাম নিত্যপণ্যের দাম। বগুড়ার মহাস্থানে সবজির পাশাপাশি বেড়েছে চাল, ডাল, ডিম ভোজ্যতেল ও ব্রয়লারের দাম।
নিত্যপণ্যের দাম কতটা বেড়েছে, তার দৃষ্টান্ত মিললো বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থান বাজারে। যে মোকামে সারা বছরই পাওয়া যায় হরেক রকমের সবজি। সেই মহাস্থান সবজির বড় মোকামে সবচেয়ে অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে সবজির দাম। সাধারণ ক্রেতারা হাটে গিয়ে দাম শুনে যেন চোখে মুখে অন্ধকার দেখছে।
মহাস্থান হাটে শীতের আগাম সবজি দেখা গেলেও সেটিতে হাত দিতে পারছে না সাধারণ ক্রেতারা। মহাস্থান পাইকারি হাতে ৫০ টাকা কেজির নিচে কোন সবজি নেই। সবচেয়ে ঊর্ধ্বগতি বেগুন, যা বুধবার হাটে ৮০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হলেও সেটি সল্প দূরত্বে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। শীতের আগাম ফুলকপি পাইকারি বাজারে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে।
শীতকালীন আগাম জাতের মুলার দামও ছিল ভোক্তাদের অসহনীয় পর্যায়ে। প্রকারভেদে মুলা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি। খুচরা বাজারে সেই মুলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। তবে ঝাঁঝ কমেছে কাচা মরিচের। ২ দিন আগে যে মরিচ ছিল ৪০০ টাকা কেজি। সেই মরিচ বিক্রি হয়েছে ২৬০ টাকা কেজি। মহাস্থান হাটে অন্যান্য সবজির দামও বেশ চড়া।
এদিকে চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি চালে বেড়ে গেছে ৫ টাকা থেকে ৭ টাকা। মহাস্থান বাজারে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৩ দিনের ব্যবধানে চালের দাম বেড়ে গেছে। মোকামে ধানের দাম বেশি তাই চালের দাও বেড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
গত ১০ দিনের ব্যবধানে ভোজ্যতেলের কেজি প্রতি বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। গরীবদের আমিষ বলে পরিচিত ডিম, মাছ ও মুরগিতেও প্রভাব পড়েছে। ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে প্রকার ভেদে ৬০ টাকা হালি। কিছু দিন আগেও যে ব্রয়লার মুরগি ছিল ১৪০ টাকা কেজি।
এখন সেই ব্রয়লার ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মহাস্থান মাছের বাজারেও দাম নিয়ে অস্থিরতা। বিভিন্ন প্রজাতির মাছের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। দফায় দফায় বাজারে পণ্যের দাম যেন আকাশচুম্বী। দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। বুধবার মহাস্থান হাটের সরেজমিনে গিয়ে বিভিন্ন মুদি দোকান ঘুরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ চিত্র দেখা গেছে।
বাজার করতে আসা ক্রেতারা জানান, বেশির ভাগ দ্রব্যের দাম সাধারণ ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। নিম্ন আয়ের মানুষ যা উপার্জন করছে, তার পুরোটাই খাদ্যদ্রব্য কিনতে শেষ হয়ে যাচ্ছে। ক্রেতারা আক্ষেপে
অভিযোগ করে বলেন, বেশি মুনাফা লাভের জন্য দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়েছে বাজারের কিছু অসাধু মুনাফালোভী সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী। প্রতিটি দ্রব্য মূল্যের দাম বাড়ে আগুন। ভোক্তারা বলছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীতিমালার সুষ্ঠু মনিটরিংয়ের অভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি।
সোনাতলা সংবাদে লিখতে পারেন আপনিও। যে কোনও তথ্য ও ভিডিও দিন নিচের WhatsApp নাম্বারে। প্রয়োজনে আপনার নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মোবাইল: ০১৭৭৪৬৫০৬৭১
E-mail: sonatalasangbad@gmail.com