গোলাম রব্বানী শিপন, মহাস্থান বগুড়াঃ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের হাতিবান্ধা নাগরকান্দী গ্রামের বাচ্চু মিয়ার পুত্র শামীম হোসেনের স্ত্রী ১ সন্তানের জননী ইতি আকতার (২৫) ঘরের তীরের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রবিবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে ইতি আকতার এর স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ইতি বগুড়া সদর উপজেলার লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামের মৃত হান্নান মিয়ার কন্যা। তবে এটি হত্যা না আত্মা হত্যা, এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। নিহতের স্বজনদের দাবী তাঁকে হত্যা করে লাশ টাঙানো হয়েছে।
এলাকাবাসী ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১ যুগ পূর্বে ইতি আকতারের সাথে পারিবারিক পছন্দে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে হয় হাতিবান্ধা নাগরকান্দী গ্রামের বাচ্চু মিয়ার পুত্র শামীম হোসেনের সাথে। তাদের সংসারে ৬ বছরের ১ টি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর ৭/৮ বছর হলো তাদের দাম্পত্য জীবন সুখেই কাটছিল।
ইদানিং শামীম মাদক আসক্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে চুরি বিদ্যা শুরু করে। এ নিয়ে তাদের সংসারে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। গত ৫ মাস পূর্বে ইতি আকতার স্বামীর এহেন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে বাবার বাড়িতে চলে যায়। শুধু ১ মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে সংসারে অশান্তি স্বত্বেও শ্বশুর শ্বাশুড়ির কথা শুনে সে স্বামীর ঘরে ফিরে আসে। স্বামী শামীম কে সুপথে আনতে অনেক বুঝানোর পরেও মাদক পথ থেকে সড়াতে পারেনি ইতি। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার শামীম স্ত্রীর সাথে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হয়। রবিবার বিকালে তার শ্বশুড় বাচ্চু মিয়া গরুর ঘাস কেটে বাড়ীতে এসে ডাকাডাকি করলে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরে ভিতরে প্রবেশ করে গৃহবধূর ইতির ঝুলন্ত লাশ দেখে চিৎকার করেন। এরপর এলাকাবাসী শিবগঞ্জ থানা পুলিশ কে খবর দিলে শিবগঞ্জ থানার এসআই ব্রজেন মাহাতো সহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে এসে নিহতের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শজিমেক) মর্গে পাঠায়।
রায়নগর ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শুনেছি প্রায় ১২ বছর আগে শামীমের সঙ্গে ইতির বিয়ে হয়। আমি এ এলাকার চেয়ারম্যান সংসার জীবনে অনেকের অনেক রকম সমস্যা হতেই পারে। আমাকে আগে জানালে এর একটা সহজ সমাধান করে দিতে পারতাম। আসলে আত্মাহত্যা কোন সমাধানের পথ নয়।
শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রউফ বলেন, সংবাদ পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারন নিশ্চিত করা যাবে।
Leave a Reply