গোলাম রব্বানী শিপন, মহাস্থান (বগুড়া) থেকেঃ শীতের সবজিতে সরগরম উত্তরবঙ্গের সবজির অন্যতম বড় পাইকারি হাট বগুড়ার মহাস্থান। বাজারে শীতকালীন সবজি রেকর্ড পরিমান সরবরাহ হয়েছে। তবে সপ্তাহর ব্যবধানে কিন্তু সবজির দাম অর্ধেকে নেমেছে।
এনিয়ে অনেকটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সাধারণ ভোক্তারা। উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত মহাস্থানের সবজি জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। শনিবার মহাস্থান হাটের সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খুব সকাল থেকেই এ অঞ্চলের কৃষকেরা তাদের জমিতে উৎপাদিত তরতাজা সবজি বিক্রি করতে মহাস্থান হাটে এসেছেন। তারা অটোভ্যান, পাল্লা ভাড় ও বড় ব্যাগ বস্তা ভরে সুন্দর করে সাজিয়ে বিক্রি করতে এসেছেন মহাস্থান হাটে।
এহাটের সবজি প্রতিদিনি অর্ধশত ট্রাক যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। শীতের আগাম জাতের সবজি সপ্তাহ খানেক আগে বেশ ভালো দাম মিললেও এখন কিন্তু দাম অনেকটা স্বাভাবিক পর্যায়ে। মহাস্থান হাটের পাইকারীরা জানান, আগাম জাতের সবজি আসার শুরুতে দাম ছিল অনেক বেশি। এখন সবজির ব্যাপক আদমানি হওয়ায় দাম স্বাভাবিক এজন্য পুঁজিও লাগছে কম। এ হাট থেকে অনেক পাইকার সবজি কিনে তারা দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করার পাশাপাশি খুচরা বিক্রি করে থাকেন।
মহাস্থান হাটে সবজি কিনতে আসা সাধারণ ভোক্তারা জানান, কিছুদিন আগেও ছিল ফুলকপি ৪৫ টাকা কেজি, মুলা ৩০ টাকা, সেই ফুলকপি ও মুলা আজ কিনলাম খুঁচরা বাজারে কপি ২৫ টাকা কেজি মুলা ১০ টাকা কেজি। মহাস্থান হাটে প্রতিটি সবজির দাম কমে যাওয়ায় সাধারণ ভোক্তাদের মাঝে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে।
এদিকে বেশকিছু কৃষক জানিয়েছেন, দেশে রাজনীতি অস্থিরতা ও অবরোধের কারণে পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় সবজির দরপতন হয়েছে।
বগুড়ার মহাস্থান হাটের সবজি প্রতিদিন ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ, ফেনি, সিলেট অঞ্চলের বাজারে যাচ্ছে। মহাস্থান আড়তে সবজি বস্তাজাত কারণ কাজে সকাল থেকেই শতশত নারী ও পুরুষ শ্রমিকেরা কাজ করেন। সেগুলো আবার মাথায় করে ট্রাকে তুলছে শ্রমিকেরা।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ মতলুবর রহমান জানান, এ বছর বগুড়ায় ৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৭৫ হাজার মেট্রিকটন আগাম ফলন পাওয়া গেছে। আর জেলায় শীতকালীন সবজি প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়ে থাকে। এ থেকে প্রতি বছর ৪লাখ মেট্রিক টনের বেশি সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। আবহাওয়া স্বাভাবিকের কারণে বগুড়ায় সবজির ভালো উৎপাদন হয়ে থাকে। এবছরও ভালো সবজি চাষ হয়েছে। এ কারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
এখন প্রতি কেজি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকায়, বাধাঁকপি ১০টাকা পিচ, মুলা ৬ থেকে ১০ টাকা কেজি, শিম বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, প্রতি কেজি বেগুন ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, লাউ ২০ থেকে ৩০ টাকা, ঢেঁড়শ ২০ টাকা, পটল ২০ থেকে ২৫ টাকা, করলা ৩০টাকা, পালংশাক ১০টাকা, ধনেশাক ১০টাকা কেজি, সরিষা শাক ৪টাকা তার, মরিচ ৫০ টাকা কেজি, পাতা পেয়াজ ৩০টাকা কেজি, পেপে ১৪ টাকা কেজি। বুধবার ও শনিবার সাপ্তাহিক হাট বার ছাড়াও প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে এ পাইকারি হাটের বেচাকেনা।
Leave a Reply