সুলতান আহম্মেদ, স্টাফ রিপোর্টারঃ সংস্কার ও প্রয়োজনীয় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে গাইবান্ধার সাঘাটা বাজার এলাকায় অলিগলিসহ চার পাশের প্রবেশ পথের রাস্তার বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে দীর্ঘদিন ।
দুইপাশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির বৃষ্টির পানির ঢাল নেমে বর্ষা মৌসুম জুঁড়ে কর্দমাক্ত থাকে। বৃষ্টি হইলেই নোংরা পানি ও কাদা জমে থাকে বাজারের চার পাশের প্রবেশ পথের জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা গুলো। ফলে এই এলাকার স্কুলগামী শিশুশিক্ষার্থী, হাসপাতালের রোগীসহ, জনসাধারণের দুর্ভোগ চরমে।
সাঘাটা বাজার এলাকাটি উপজেলার অন্যতম জনগুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী একটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র। এছাড়া এই বাজারটির আশেপাশে রয়েছে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সাঘাটা ডিগ্রী কলেজ, সাঘাটা থানা, সাঘাটা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, সাঘাটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, দুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫টি প্রাথমিক পর্যায়ের কিন্ডারগার্টেন স্কুল, অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও জনবসতি।
বাজারের জনপ্রিয় পল্লী চিকিৎসক দ্বীজেন্দ্র নাথ পাল বলেছেন, সম্মুখ গলিতেই নোংরা পানি ও কাদা জমে থাকে। চেম্বার ও ঔষধের দোকানে প্রতিদিন শতাধিক রোগি আসে। তারা নিরুপায় হয়ে কাদা পায়ে প্রবেশ করে বলার কিছুই থাকেনা । কাঁচামাল ব্যবসায়ী রুবেল বলেছেন, এই গলিতেই প্রতিদিন ফল ও সবজির দোকান বসে । এখানে নোংরা পানি আর কাঁদা থাকায় নিচে ইট,পাথর অথবা কাঠ দিয়ে দোকানে বসতে হয়। কাঁদার কারণে বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা চরম দুর্ভোগে পরে । বেশির ভাগ সময় এখানে জলাবদ্ধতার কারনে কাঁদা থাকে ও দুর্গন্ধ ছড়ায়। এইরকম জায়গাগুলো থেকে এডিস মশার উৎপত্তির শঙ্কা রয়েছে।
সাঘাটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন একটু বৃষ্টি হলেই শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সমস্যা হয়ে যায়। কেউ পিছলে পরে বই-খাতা ভিজিয়ে ফেলে, পরে গিয়ে হাত-পা ভেঙে/সিলে যায়। তিনি দ্রুত এই রাস্তার সংস্কারের দাবি জানান ।
এছাড়াও বাজারের প্রবেশ পথ সাঘাটা হাসপাতালের রাস্তা, বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের রাস্তা , ডিগ্রী কলেজের রাস্তা, পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়গামী রাস্তা, থানার রাস্তা, হাসিলকান্দিগামী রাস্তা, চিনিরপটলগামী রাস্তা, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাস্তার বেহাল অবস্থা।
বাজার প্রবেশ পথ (রাস্তায়) প্রয়োজনীয় পানি নিস্কাশন ব্যবস্থাসহ সংস্কার ও প্রশস্ত করণের অভাবে নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ফলে সাঘাটা হাসপাতালগামী রোগী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশু শিক্ষার্থীসহ এই এলাকার জনসাধারণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
শুধু তাই নয় সাঘাটা বাজারের সৌচাগারের পরিস্থিতি আরও নাজুক। অনেক আগেই বাজারের দুইটি টয়লেট মলে ভরে গিয়েছে, প্রসাবের স্থানেও মলে ভরপুর। এখানে নেই পরিচ্ছন্ন কর্মী,নেই পানির কোনো ব্যবস্থা, দুর থেকে পানি বহনকরে ব্যবহার করতে হয় টয়লেট, পানির অভাবেই আরও পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। একারণে সৌচাগারটি থেকে পুরো বাজারে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
বাজারের অলিগলিতে জমে থাকা ময়লা,নোংরা পানি ও সৌচাগারের দুর্গন্ধ যেমন একদিকে বাজার এলাকার পরিবেশ দুষণ করছে ,অপরদিকে মরন ঘাতক এডিশ মশারও জন্ম নেয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সাঘাটা বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মাজেদ মন্ডল ‘রাঙ্গা’ বলেন, ‘আমাদের বাজারের অবস্থা শোচনীয়, বৃষ্টি হইলে পানি নিষ্কাশন হতে দেরি হওয়ায় পথ কর্দমাক্ত হয়ে যায়। বাজার পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে মাঝে-মধ্যে ভাঙা ইট এনে দিলেও তা অপ্রতুল। সরকারিভাবে সংস্কার অতিব জরুরী । কিন্তু সরকারি ভাবে সংস্করণের কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট বলেছেন, বাজারের ব্যবসায়ীদের অসহযোগিতার কারণে সাঘাটা বাজারের উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছেনা, একটা অস্থায়ী ড্রেন করেছিলাম। সৌচাগারের জন্য টিউওয়েল স্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা স্থাপন করতে দেয়নি। যেটুকু উন্নয়ন হয়েছে জোরজুলুম করে করতে হয়েছে। সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল কামাহ্ তমাল বলেন, ‘বাজারগুলোতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার বিষয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে।
Leave a Reply