মিলন, সারিয়াকান্দি প্রতিনিধিঃ জাতীয় একটি পত্রিকায় ‘‘মেসার্স ফাবিহা ট্রেডার্স’’ এর নামে মিথ্যা খবর প্রচার করার অভিযোগে ও তার প্রতিবাদে ইজারাকৃত বালুমহাল পুনরায় চালুর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১৪ মার্চ) সকালে সারিয়াকান্দি প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারি মো. ইফাজ উদ্দিন প্রামাণিক। ইজারাদার ইফাজ উদ্দিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তালিকাভুক্ত বালুমহালের একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার।
গত ১৪ মার্চ তারিখে সমকাল পত্রিকায় “এক স্থানে বালু ও ইজারা ১০ পয়েন্টে ড্রেজার” শিরোনামে যে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এতে তার সম্মানহানি ও আর্থিকভাবে ব্যবসার ক্ষতিসাধিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হইতে ১৯/০৬/২০২৩ ইং তারিখ সরকারি স্মারকে একটি বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে বালু মহালটি এক বছরের জন্যে ইজারা চেয়ে ৫ জুলাই ২০২৩ইং তারিখে দরপত্র দাখিল করেন। দরপত্র দাখিলের প্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হইতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট সহ সর্বমোট ১ কোটি ৫২ লাখ ৬২ হাজার ৫’শ টাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দেন। পরবর্তীতে জনৈক মজনু মিয়া কর্তৃক মহামান্য হাইকোর্টে ৮৭৫৪/২০২৩ নং রিট মামলা দায়ের করেন।
উক্ত রিট মামলার নিষেধাজ্ঞা বিরুদ্ধে নিজে বাদী হয়ে নিজ খরচে মহামান্য সুপ্রিট কোর্ট ২৪২৩/২০২৩ নং আপিল মামলার আদেশ মোতাবেক ৩ সেপ্টেম্বর তারিখে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে আদেশপ্রাপ্ত হয়ে বালুমহালটি দখল প্রাপ্ত হন। পরবর্তিতে নাড়াপালা বালুমহাল হইতে বাল্কগেট মাধ্যমে বালু পরিবহন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক অনুমোদিত নিজনামে লিজকৃত ৪টি স্থানে বালু স্তুপ করে রাখা হয়।
উক্ত স্থান হইতে সংরক্ষিত বালি সবেমাত্র বিক্রয় শুরু করেন। এমতাবস্থায় জেলা প্রশাসক কর্তৃক বিনা নোটিশে অজানা কারণে চলতি বছরের ৩ ফ্রেব্রুয়ারি হইতে বালু উত্তোলন ও বিক্রয় করা থেকে বিরত থাকার জন্যে মৌখিকভাবে জানানো হয় ও লাল পতাকা টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখেন। পরবর্তীতে মোখিকভাবে চালাতে বলে এবং পরের দিনেই আবার কার্যক্রম বন্ধ করতে বলা হয়। এভাবে কয়েক দফায় চালু ও বন্ধ করতে বলা হয়।
এমতাবস্থায় বেশ কয়েকবার মাননীয় জেলা প্রশাসকের নিকট বালুমহালের কার্যক্রম পুনরায় চালু করার জন্যে আবেদন করলেও জেলা প্রশাসকের কোনো উত্তর না পেয়ে ১১ মার্চ ২০২৪ইং তারিখে মহামান্য হাই কোর্টের শরনাপন্ন হয়ে একটি রিট মামলা করেন যাহার নং: ২৮৭০/২০২৪। একই দিনে মামলার আদেশ প্রাপ্ত হয়ে বালু মহালের কার্যক্রম চালাতে আইনগত কোনো বাধা নেই মর্মে আদেশের উকিল নোটিশটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও উপজেলা ভুমি অফিসে পৌঁছে দিলে ১৩ মার্চ হইতে বালু উত্তোলণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। কিন্তু আবারো ১৪ মার্চ তারিখে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ফোনকলের মাধ্যমে বালুমহাল কার্যক্রম বন্ধ করতে বলা হয়।
সরকারের সকল আইন মেনে ও ইজারা মূল্য, ভ্যাট, ট্যাক্স পরিশোধ করে এবং মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ প্রাপ্ত হয়েও বালুমহালের কার্যক্রম চালু করতে না পেরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ৩ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে অধ্যবদি প্রায় দেড় মাস বালুমহাল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ১লাখ ৪৪ হাজার ২০ টাকা যা এ পর্যন্ত ৪৫ দিনে ৬৪ লাখ ৮০ হাজার ৯শত টাকা ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মর্মে ১০ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানানো হয়। প্রশাসনের এমন গরিমেশিতে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রায় ২০ টি পরিবার পথে বসেছে এবং তিনি বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
এরপরেও একজন সাংবাদিক ফোন কলের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা চান এবং দিতে ব্যর্থ হওয়ায় জেলা থেকে দৈনিক সমকাল পত্রিকার সাংবাদিককে এনে একটি অবাস্তব, মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন সংবাদের বিপক্ষে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি ন্যায়ের স্বার্থে সঠিক সংবাদটি পরিবেশের মাধ্যমে উর্ধ্বতনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং এই হয়রানি থেকে ২০ টি পরিবারকে পরিত্রাণ চান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, আব্দুল মোমিন, রেজাউল করিম রনি, আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।
Leave a Reply