1. sonatalasangbad@gmail.com : সোনাতলা সংবাদ :
বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

সারিয়াকান্দির দুটি পয়েন্টে যমুনা নদীর তীব্র ভাঙন, প্রতিরোধে পাউবোর কাজ শুরু

  • শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫
  • ৬১

সোনাতলা সংবাদ ডেস্কঃ বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনা নদীর ডানতীর এবং বামতীরের দুটি পয়েন্টে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বামতীরের একটি গ্রামের ৩৫০ মিটার এলাকায় নদী ভাঙনে ২০টির বেশি পরিবারের বসতভিটা যমুনায় বিলীন হয়েছে। ডানতীরের একটি পয়েন্টে ৫০০ মিটার এলাকায় তীব্র ভাঙনে শত বিঘা কৃষিজমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙন মোকাবিলায় ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও এবং টিও ব্যাগ ফেলছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বগুড়া সারিয়াকান্দির একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের মানিকদাইড়। এ গ্রামে তিন হাজারের বেশি পরিবারের বসতি ছিল। গ্রামটি যমুনা নদীর বামতীরে অবস্থিত। গত ২০০৪ সাল থেকে এ গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙন শুরু হয়। ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে ২০১০ সালের পর থেকে। গ্রামটির পাঁচতলাবিশিষ্ট কমিউনিটি ক্লিনিক গত ২০১৬ সালে যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে।

এ গ্রামের উত্তর টেংরাকুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০০৮ সালে, চরচালুয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১১ সালে এবং মানিকদাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গত ২০১৫ সালে ভাঙনের শিকার হয়, যা এখন অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে প্রায় ১০ থেকে ১২টি মসজিদ যমুনায় বিলীন হয়েছে। এ গ্রামের দু’টি গুচ্ছগ্রাম ২০১৭ সালে এবং একটি বিশালাকার আশ্রয়ন প্রকল্প গত ২০১৬ সালে যমুনা নদীতে বিলীন হয়েছে।

গত কয়েক বছরে এ গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার তাদের বসতভিটা হারিয়েছেন। তারা এখন বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে বসতি স্থাপন করেছেন। কেউবা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। চলতি বছরে ৩৫০ মিটার এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

এ বছরও ১৫টি পরিবার যমুনা নদীর ভাঙনের শিকার হয়েছে। তবে গ্রামটিতে এখনো প্রায় ১৭শ’ পরিবারের বসতি রয়েছে। গ্রামটির একমাত্র মানিকদাইড় বাজার এখন ভাঙন হুমকিতে রয়েছে। তবে জরুরি ভিত্তিতে এখানে বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে জিও এবং টিও ব্যাগ ফেলে নদী ভাঙন মোকাবিলায় কাজ শুরু করা হয়েছে।

এ গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, মানিকদাইড় গ্রাম এ এলাকার একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। গ্রামটি ভাঙতে ভাঙতে একেবারেই শেষের দিকে। তবে গত কয়েকদিন ধরেই এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে। কাজটি সমাপ্ত হলে এখানে নদী ভাঙন সাময়িক বন্ধ হবে। তবে আমরা এখানে স্থায়ী ভিত্তিতে কাজ চাই।

এদিকে যমুনা নদীর ডানতীরে কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। সেখানে ৫০০ মিটার এলাকায় যমুনা নদীর ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিনে যমুনা নদীর ভাঙনে প্রায় কয়েকশ’ বিঘা ফসলি জমি যমুনায় বিলীন হয়েছে। এসব জমিতে আউশ ধান, পাট, কাউন, চিনা বাদাম, বেগুন ও ভুট্টার উঠতি ফসল ছিল এখন সেখানে যমুনা নদীর অথৈই পানি।

নিজেদের ফসলি জমি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এ এলাকার ভাঙন কবলিত মানুষ। এদিকে এখানে মূল ভাঙন এলাকা থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের দূরত্ব মাত্র ১৫০ মিটার। তাই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধটি হুমকিতে রয়েছে। এখানে ভাঙন চলমান থাকলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এতে পূর্ব বগুড়ার প্রায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তবে গত কয়েকদিন আগে থেকেই এখানেও বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও এবং টিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন মোকাবিলায় কাজ শুরু করেছে। ৫০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যেই সমাপ্ত হয়েছে। গত কয়েকদিন আগে বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, যমুনা নদীর সারিয়াকান্দি উপজেলায় মানিকদাইড় পয়েন্টে ৩৫০ মিটার এবং ইছাদহ পয়েন্টে ৫০০ মিটার এলাকায় যমুনা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ভাঙন মোকাবিলায় সেখানে জিও এবং টিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

শতকরা ৫০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যেই সমাপ্ত করা হয়েছে। সেখানে ভাঙন এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় নদী ভাঙন রোধে বেশকিছু স্থায়ী প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চল নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নিউজে সর্বশেষ

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট