গাবতলী (বগুড়া) প্রতিনিধি ঃ বগুড়ার গাবতলীতে নুরুল ইসলাম উজ্জ্বল (৩৬) নামের এক ইউপি সদস্যকে ছুড়িকাঘাতের ঘটনায় গাবতলী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১০সেপ্টেম্বর ঘটনার রাতেই মামলাটি দায়ের করেন গুরুত্বর আহত ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বলের ছোট ভাই আব্দুর রাজ্জাক। এ ঘটনায় পুলিশ এজাহার নামীয় একজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। গুরুতর আহত উজ্জ্বল মেম্বার বর্তমানে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
মামলাসূত্রে জানা গেছে, গাবতলীর সুখানপুকুর ইউনিয়ন আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আমতলীপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে নুরুল ইসলাম উজ্জ্বল সুখানপুকুর ইউপির ৮নং ওয়ার্ড সদস্য নির্বাচিত হয়ে সু-নামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে। কিন্তু প্রতিপক্ষ বিবাদী একই গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে মোঃ ফারুক প্রাং নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই নির্বাচিত ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বলের বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে আসছিল। এরমধ্যেই বিবাদী ফারুক প্রাং পার্শ্ববর্তী চকডঙর গ্রামের জনৈক সিদ্দিক এর মেয়ে মোছাঃ সেতু (১৯)কে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই তাদের কোন বনিবনা হচ্ছিলো না। পরে সেতু তার স্বামী ফারুকের বিরুদ্ধে বগুড়া আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটির আপোষ-মিমাংসার দায়িত্ব দেয় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের উপর। এরই প্রেক্ষিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর বেলা ১২টার সময় বিবাদী ফারুক, তার তৃতীয় স্ত্রী সেতুর পরিবারের সদস্য, স্থানীয় লোকজনসহ সকল ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম্য শালিশ বসলেও তাদের মধ্যে আপোষ হয় না। ওই শালিশের পর ফারুক প্রাং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে শালিশে উপস্থিত ইউপি সদস্য উজ্জ্বলকে গালিগালাজসহ প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এরই জের ধরে ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার সময় নুরুল ইসলাম উজ্জ্বল সুখানপুকুর বাজারের মসজিদ হতে মাগরিবের নামাজ শেষে ফেরার পথে সুখানপুকুর রেলওয়ে বন্দর কৃষি সমবায় সমিতির অফিস ঘরের সামনে গলি পথে পৌঁছিলে ফারুক ও তার দলবল ঘিরে ধরে। এরপর ফারুকের হুকুমে তারই আপন ছোট ভাই পারভেজ প্রাং ধারালো চাকু দিয়ে উজ্জ্বলের পেটের বাম পাশে আঘাত করলে গুরুত্বর রক্তাক্ত কাটা জখম হয়। উজ্জ্বল মাটিতে লুটিয়ে পরলে তারা এলোপাতারী কিলঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। এ সময় উজ্জ্বলের পাঞ্জাবির পকেট থেকে ৪৬হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় ওই সন্ত্রাসীরা। পরে উজ্জ্বলের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে আহত উজ্জ্বলের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। এ ঘটনায় আহত উজ্জ্বলের ছোট ভাই আঃ রাজ্জাক বাদী হয়ে ফারুককে প্রধান করে ৫জনের নাম এবং ২/৩জনকে অজ্ঞাত করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ এজাহার নামীয় সামছুল প্রাং (৫০)কে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন। গ্রেফতারকৃত সামছুল একই গ্রামের মৃত ওছমান প্রাং এর ছেলে এবং ফারুক প্রাং এর চাচা। এ ব্যাপারে থানার ওসি সনাতন চন্দ্র সরকার স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ১জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সুখানপুকুর বন্দরে পুলিশ মোতায়ের রয়েছে। এদিকে ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বলকে ছুরিকাঘাতের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পরলে ঘটনার পরপরই উত্তেজিত জনতা ফারুককে ধরে মারপিট এবং দোকান ভাংচুর করেছে। আহত ফারুকও এখন বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
Leave a Reply