স্টাফ রিপোর্টারঃ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক রয়েছেন দুজন একজন চেয়ারে আরেক রয়েছেন কাগজে । এমনি চিত্র দেখা যায় বগুড়ার সোনাতলা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজে।
জানাযায়, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমান অবসরে যাওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষক জিএম আহসান হাবীবকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন তিনি। এর পর থেকে আহসান হাবীব নির্বিঘ্নে তার দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
গত ৫ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী, শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিত থাকায় বিভিন্ন অনিয়ম দেখে পদত্যাগের দাবি তুলে। এক পর্যায়ে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করেন তিনি।
এরপর থেকে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে রয়েছে কলেজ শাখার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শাহাদুতজ্জামান সাজু।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিএম আহসান হাবীব বলেন, আপনারা সবি জানেন সবি বোঝেন সে সময় আমাকে মোবাইল ফোনে অনেকেই হুমকি ধামকি দিতে থাকে। তাই আমি কয়েক দিন প্রতিষ্ঠানে যায়নি ।
পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানে গেলে একটি পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর দিতে বলে। সেখানে লেখা ছিল শারীরিক অবস্থার ভালো না থাকায় সহস্থে স্ব-জ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে পদত্যাগ করিলাম। নিরুপায় হয়ে সেখানে স্বাক্ষর করে দেই। এরপরে তারা আমাকে চেয়ার থেকে নেমে যেতে বলে আমি তাই করি। সেই চেয়ারে কলেজ শাখার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শাহাদুজ্জামান সাজুকে বসিয়ে দেন।
পরবর্তীতে পদত্যাগ পত্র মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মহাপরিচালক অফিসে গেলে পত্রটি গ্রহন না করে ফেরত পাঠান। পরবর্তীতে প্রভাষক সাজু ডিডি অফিসে যোগাযোগ করলে পদত্যাগ কারীকে স্ব-শরীরে দপ্তরে উপস্থিত দেখতে চায়। কয়েক দিন পর চেয়ারে থাকা প্রভাষক সাজু সাবেক প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমান ও আহসান হাবীবকে সঙ্গে করে ডিডি অফিসে নিয়ে যায়।
ডিজি মহোদয় বিষয়টি অবগত হওয়ার পর বলেন, শারীরিক অবস্থা অক্ষম হলে সে আর চাকুরী করতে পারবে না। যেহেতু সরকারি প্রতিষ্ঠান জেনে শুনে ক্ষতি করা যাবে না। সেখানে থেকে সবাই ফেরত এসে প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক কে নিয়ে আলোচনায় সবকিছু জানান দেয় আহসান হাবীব। তখন সবাই বলেন যেহেতু পদত্যাগ গ্রহন হয়নি প্রশাসনিক ক্ষমতা তারেই রয়েছে। তাকে চেয়ারে বসতে না দিয়ে বরং সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে বসতে বলেন এবং প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর নেয় তারা। সাধারণ বিষয় প্রশংসা পত্রে স্বাক্ষর দেন চেয়ারে থাকা প্রভাষক সাজু।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসার বৈধতার কথা জানতে চাইলে কলেজ শাখার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শাহাদুজ্জামান সাজু বলেন, মহাপরিচালকের কার্যালয়ে বসে তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে আমার নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করে।
মহাপরিচালকের কার্যালয় কর্তৃক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জিএম আহসানের পদত্যাগ পত্র গ্রহণের স্বীকৃতি অথবা উক্ত কার্যালয় হতে কোন অনুমতিপত্র দেখাতে পারেনি শাহাদুজ্জামান সাজু।
এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ নাজমুল হক জানান, প্রতিষ্ঠানে দুই প্রধান শিক্ষক থাকার কোন সুযোগ নেই।
যিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আছেন উনিই থাকবেন। সাবেক প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমানসহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সাহাদুজ্জামান ডিজি মহোদয়ের কার্যালয়ে গেলে ডিজি মহোদয় নির্দেশনা দেন যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক যিনি ছিলেন তিনিই বলবৎ থাকবেন। নির্দেশনা উপেক্ষা করে শাহাদুজ্জামান প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে তালা দিয়েছে। সমাধানের লক্ষ্যে শাহদুজ্জামানকে এক সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছে অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বীকৃতি প্রামানিক বলেন বিষয়টি আমি জেনেছি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সমন্বয়ে সমাধান করার জন্য বলেছি
সোনাতলা সংবাদে লিখতে পারেন আপনিও। যে কোনও তথ্য ও ভিডিও দিন নিচের WhatsApp নাম্বারে। প্রয়োজনে আপনার নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মোবাইল: ০১৭৭৪৬৫০৬৭১
E-mail: sonatalasangbad@gmail.com