লতিফুল ইসলাম, সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার সবুজ সাথী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভৌত বিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষক মালিকী জাহানের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি একই সাথে বগুড়ার সোনাতলার সবুজ সাথী উচ্চ বিদ্যালয় ও সারিয়াকান্দি উপজেলার নওখিলা পি.এন. উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বেতন-ভাতা তুলেছেন। এই প্রতারণার ক্ষেত্রে তিনি এনটিআরসিএ কর্তৃক আলাদা ইনডেক্স নম্বর ও ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার ব্যবহার করেছেন। শিক্ষক মালিকী জাহান এ বিষয়ে মুখ না খুললেও কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে স্পর্শকাতর উল্লেখ করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক মালিকী জাহান গত ০৭ ফেব্রæয়ারি ২০২২ সালে সারিয়াকান্দি উপজেলার নওখিলা পি. এন. উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। একই বছরের মার্চ মাস থেকে তার পদটি এমপিও হয় এবং তিনি বেতন উত্তোলন শুরু করেন। নওখিলা উচ্চ বিদ্যালয়ে তার ইনডেক্স নম্বর-ঘ৫৬৮২৬২২১. শিক্ষকদের বেতনের এমপিও শিট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিনি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত উক্ত বিদ্যালয় থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, উক্ত বিদ্যালয়ে চাকুরীরত অবস্থায় তিনি ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রæয়ারি সোনাতলার সবুজ সাথী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। সবুজ সাথী উচ্চ বিদ্যালয়ে তার এমপিও ইনডেক্স নং- ঘ৫৬৮৫২৯৬৩. বর্তমানে তিনি সবুজ সাথী উচ্চ বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। ২০১৯ সালে সবুজ সাথী উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করে কর্মরত অবস্থায় ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি কীভাবে পূর্বের বিদ্যালয় অর্থাৎ নওখিলা পি. এন. উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বেতন উত্তোলন করলেন সেই প্রশ্নই এখন সামনে আসছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মালিকী জাহানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। সবুজ সাথী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাসিনা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন এবং এই প্রতিবেদককে টাকার অফার করেন।
নওখিলা পি. এন. উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবু বিমান কুমার সাহা মালিকী জাহান সম্পর্কে বলেন, ‘‘আমার প্রতিষ্ঠানে তিনি ২০২২ এর ফেব্রæয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকুরী করেছেন। এরপর তিনি রিজাইন দিয়ে অন্য স্কুলে চলে যান।’’
সারিয়াকান্দি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। আমি জেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করবো।’’
সোনাতলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নজমুল হক বলেন, ‘‘বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর এবং লজ্জাজনক। একজন শিক্ষক একই সাথে দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন-ভাতা নিতে পারেন না। আমরা তথ্য যাচাই-বাছাই করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।’’
Leave a Reply