আব্দুর রাজ্জাক, স্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ার সোনাতলায় ভুয়া টিসিবি কার্ডের মাধ্যমে ৬টি গ্রামের প্রায় ৭০০ গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে মহিলা ইউপি সদস্য নাহিদ নাসরিন সাথীর বিরুদ্ধে। ১০ জুন সন্ধ্যার দিকে প্রায় তিনশত গ্রাহক ওই ইউপি সদস্যের বাড়ির উঠানে টাকা ফেরতের দাবিতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
সরেজমিনে বগুড়ার সোনাতলার জোরগাছা ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়া গ্রামের ওই ইউপি সদস্যের বাড়িতে গিয়ে তা দেখা যায়। জানা যায়, তিনি জোড়গাছা ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য। তিনি ওই গ্রামের রেজাউল হক রেজভীর স্ত্রী।
সাংবাদিকদের উপস্থিত দেখে সেখানে থাকা প্রায় তিনশতাধীক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, 'টিসিবির কার্ড দেওয়ার কথা বলে মহিলা মেম্বার সাথী ও তার স্বামী আমাদের থেকে ২৫০ করে টাকা নেন এবং বলেন তোমাদেরকে নিয়মিত টিসিবির পণ্য দেওয়া হবে। আমরা সেই অনুযায়ী মহিলা মেম্বর সাথীকে টাকা দেই। এরপর তিনি কোনো কার্ড না দিয়ে আমাদেরকে আজকে দুপুরে আসতে বলে।
আমরা আজকে (১০ জুন) আসলে তিনি আমাদের থেকে আরও ৮০০ টাকা নিয়ে নামহীন কোম্পানীর প্রায় চার পাচশত টাকার পন্য ধরিয়ে দেন। আমরা এ পণ্য নিবো না। আমাদের টাকা ফেরত চাই। কিন্তু টাকা ফেরত চাইলে তিনি টাকা না দিয়ে আমাদের সাথে মারমুখী আচারণ করেন ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। সেখানে থাকা স্বপন নামের এক ব্যক্তি বলেন আমি পন্য না নিয়ে টাকা ফেরত চাওয়ায় আমাকে থাপ্পড় মারা হয়। আমি এর বিচার চাই'।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহিলা ইউপি সদস্য নাহিদ নাসরিন সাথী বলেন, 'একটি কোম্পানি আমাদের কাছে এসে টিসিবির মতো একটি কার্ড দেওয়ার কথা বলে গ্রাহক বাড়াতে বলেন এবং ২৫০ টাকা সদস্য ফি নিতে বলেন। আমি সরল বিশ্বাসে তাদের কথা অনুযায়ী গ্রাহক ভর্তি করাই। এখন কেউ যদি পন্য পছন্দ না করে তবে টাকা ফেরত দিবো। কোন কোম্পানি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এফজিএস গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেড।
এফজিএস গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেডের সেখানে দায়িত্বে থাকা আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা যে সকল পন্য দিতে চেয়েছিলাম সেই পন্যই দিয়েছি। তবে গ্রাহকদেরকে হয়তো কেউ ভুল বুঝিয়েছে। আর যেহেতু একটা ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে সেহেতু আমরা পর্যায়ক্রমে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেবো'। দায়িত্বে থাকা এফজিএস গ্লোবাল কোম্পানি লিমিটেডের ডিলার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি একজন ডাক্তার পণ্য বিষয়ে আমার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে। আমরা ২৫০ টাকার ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে এ পণ্যগুলো বিক্রয় করে থাকি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টি আমি এক জনের মাধ্যমে অবগত আছি। তাকে সচেতন মূলক কথা বলেছি প্রতারণা হবেনা না অন্যদেরকে সাবধান করে দেবেন। এছাড়াও আমি মাইকিংয়ের মাধ্যমে সচেতন করতে চাইছিলাম। কিন্তু আমি অসুস্থ থাকার কারনে সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা শারমিন বলেন, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে অবগত হলাম আমি মহিলা ইউপি সদস্য সাথীর সাথে কথা বলে আপনাদের জানাচ্ছি। পরবর্তীতে তিনি জানান, এটা সরকারি কোন টিসিবি না অন্য কোন কোম্পানি। আমি এখন কোন মন্তব্য করতে পারছি না। আমি খোঁজ খবর নেই আপনারাও খোঁজ খবর নেন।
সোনাতলা সংবাদে লিখতে পারেন আপনিও। যে কোনও তথ্য ও ভিডিও দিন নিচের WhatsApp নাম্বারে। প্রয়োজনে আপনার নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মোবাইল: ০১৭৭৪৬৫০৬৭১
E-mail: sonatalasangbad@gmail.com