সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় পুলিশের গাড়ি ব্যবহার করে ডাকাতির ঘটনায় ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান, পিপিএম (বার)। শনিবার দুপুরে তিনি উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়নের কাতলাহার গ্রামে এ ঘটনার শিকার ব্যক্তিবর্গের সাথে কথা বলেন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের কথা জানান।
এ সময় বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার মোঃ জেদান আল মুসা পিপিএম, সোনাতলা শিবগঞ্জ সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, সোনাতলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিলাদুন নবী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে পুলিশের গাড়ি ব্যবহার করে এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়ে। এমতাবস্থায় রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত শুরু কথা জানান। এসময় তিনি ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য গ্রহণ করেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। আমরা চেয়েছি আমাদের একটা পরিবেশ হোক যেখানে মানুষ নিরাপদে থাকবে। পুলিশের গাড়ি ব্যবহার করে আর যেন এ ঘটনা ঘটাতে না পারে। সেইজন্য গাড়ির মুভমেন্টগুলো আমরা মনিটর করতে পারি। পুলিশ সদস্য যদি খারাপ হয় তাহলে দেখা যাবে যে সে যেকোনো অপরাধে জড়িয়ে যেতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, জড়িত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। বিভাগীয় মামলা করে তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত শাস্তির জন্য আমাদের যা যা করণীয় তার সবই আমরা করবো। আইনী ব্যবস্থায় তার চ‚ড়ান্ত শাস্তি হলো চাকরিচ্যুতি করা এবং আমরা তাকে চাকরিচ্যুতি করবো।’
উল্লেখ্য, এপিবিএন সদস্য (পুলিশ) আল হাদীর গ্রামের বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার চারালকান্দি গ্রামে। পার্শ্ববর্তী কাতলাহার গ্রামের শফিকুর রহমান ফটোর ছেলে ওয়ালিদ অনলাইন জুয়া খেলে। এমন খবর আল হাদী তার চাচাতো ভাই তারেক রহমানের মাধ্যমে পান। এরপর আটককৃতরা বুধবার রাত আনুমানিক ১২টার দিকে এপিবিএন’র ডাবল কেবিন পিকআপ নিয়ে কাতলাহার গ্রামে যায়। সেখানে তারা নিজেদেরকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওয়ালিদকে আটকের চেষ্টা করে।
এসময় ওয়ালিদের বাবা তাদেরকে ৭০ হাজার টাকা দেন। টাকা নিয়ে পুলিশের পিকআপ সেখান থেকে রওনা করলে শফিকুর রহমান ফটোর সন্দেহ হলে তিনি জাতীয় পরিসেবা ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি জানান। এরপর গাবতলী ও সদর থানা পুলিশ পিকআপটি আটকের জন্য অভিযানে নামে। রাত দেড়টার দিকে সাবগ্রাম দ্বিতীয় বাইপাসে পুলিশের পিকআপটি আটক করে সদর থানা হেফাজতে নেয়া হয়।
থানা হাজতে আটক এপিবিএন সদস্য আল হাদী জানান, কাতলাহার গ্রামের ওয়ালিদ অনলাইন জুয়ায় টাকা লাগায়। তাকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের জন্য পুলিশের গাড়ি নিয়ে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি সেখান যান। এরপর ওয়ালিদের বাবা শফিকুর রহমান ফটো স্বেচ্ছায় তাদেরকে ৭০ হাজার টাকা দেন। টাকা নিয়ে ফেরার পথে উক্ত ঘটনায় পুলিশ সদস্য ও কলেজ ছাত্র এবং পুলিশের পিকআপসহ ৭জন কে আটক করে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী দ্রæত স্বচ্ছ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।
সোনাতলা সংবাদে লিখতে পারেন আপনিও। যে কোনও তথ্য ও ভিডিও দিন নিচের WhatsApp নাম্বারে। প্রয়োজনে আপনার নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মোবাইল: ০১৭৭৪৬৫০৬৭১
E-mail: sonatalasangbad@gmail.com