আব্দুর রাজ্জাক, স্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ার সোনাতলায় ছবি বেগম ও রঞ্জু মিয়া মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রশাসনের নাকের ডগায় । ছবি ও রঞ্জু বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। পৌর এলাকায় থানা থেকে ৫শ মিটার পূর্ব গড়ফতেরপুর গ্রামে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে রঞ্জু এবং থানা থেকে ৫শ মিটার পশ্চিমে শহরের প্রাণ কেন্দ্রে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে ছবি বেগম। তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৫টি মাদক মামলা রয়েছে।
ছবি মাদক বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, 'আমার স্বামী ও আমার মোট ১৭টা মামলা রয়েছে। আমাদের অন্য কোনো আয়ের উৎস নেই। এই মামলা গুলো চালাবো কিভাবে? তাই মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি'। বর্তমানে তিনি কি ধরনের মাদক বিক্রি করেন, জানতে চাইলে বলেন হেরোইন ছাড়া আর কিছু না। তবে দৈনিক ২০/২৫ জন ক্রেতার কাছে মাদক বিক্রি করে থাকেন বলে তিনি জানান।
এদিকে রঞ্জুর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কথাটি অস্বীকার করে বলেন, 'মাদক বেচে মাসে দশ হাজার টাকাই কামাই করা যায় না, আর পুলিশকে কিভাবে টাকা দিবো'। তবে তিনি মাদক বিক্রির কথা স্বীকার করেন। রঞ্জুর নামে প্রথম মাদক মামলা হয় ২০১৪ সালে। তার নামে এ পর্যন্ত ৫টি মাদক মামলা রয়েছে।
ছবির কাছ থেকে মাদক ক্রয় করে বের হওয়ার সময় শাহীন নামের এক যুবক জানায়, 'আমি ছাড়াও আরও অনেকেই কয়েকদিন ধরে ছবির থেকেই পাতা (হেরোইন) কিনি। ২৫০ টাকায় এক পুরো পাওয়া যায়। অন্যান্য ব্যবসায়ীদের তুলনায় ছবির পুরোর সাইজ একটু বড় হওয়ায় এর কাছ থেকেই কিনে থাকি'। এছাড়াও মাদক সেবনের বিনিময়ে ছবির বাড়িতে বিভিন্ন গৃহস্থালি কাজ করছেন সনি নামের এক যুবক।
তিনি জানান, দৈনিক তিনি ২৫০ টাকার বিনিময়ে এসব কাজ করে থাকেন। আর এই ২৫০ টাকা দিয়েই তার কাছ থেকে এক পুরো হেরোইন কিনে খায়। থানা সূত্রে জানা যায়, ছবি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে। তার নামে প্রথম মাদক মামলা হয় ২০১৬ সালে। এবং সর্বশেষ মাদক মামলা হয় ২০২৩ সালে। মোট মাদক মামলা দারায় তার বিরুদ্ধে ৮টি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে একটি গরু চুরি মামলা রয়েছে।
এদিকে তার স্বামী মো: শহীদুল সর্দারের নামে ২০০৬ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে তার নামে ৮ টি মামলা রয়েছে। এই মোট ১৭টি মামলা তাদের বিরুদ্ধে। ছবি বেগম এখনও কিভাবে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন জিজ্ঞাস করলে তিনি মুচকি হেসে বলেন, 'এসব ম্যানেজ করা রয়েছে।
তবে কিভাবে ম্যানেজ করেছে তা না বললেও এলাকার আরেক শীর্ষ মাদক ব্যবসী রঞ্জুর কথা বলে বলেন, 'রঞ্জুকে গিয়ে ধরেন। অইতো থানায় ৫০ হাজার টাকা করে দেয়'। এলাকাবাসীর অভিযোগ, থানার এতো কাছে হওয়া সত্ত্বে পুলিশ তাকে ধরতে এখনও তৎপর নয়। মনে হচ্ছে তিনি যেনো মাতৃকোলে বসে মাদক ব্যবসা করছেন। এর ফলে এলাকার যুবসমাজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই এই মাদক ব্যবসা অচিরেই বন্ধ হোক।
'প্রশাসন ম্যানেজ' কথাটি অস্বীকার করে সোনাতলা থানার ওসি বাবু কুমার সাহা বলেন, 'প্রশাসন ম্যানেজ এটার প্রশ্নই উঠে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। আমরা মাদককে কোনো ভাবেই প্রশ্রয় দেবো না। আর মাদক ব্যবসায়ীদের কয়েকবার গ্রেফতার করে হাজতে প্রেরণ করেছি। তারা যদি জামিনে এসে আবার এর সঙ্গে যুক্ত হয় তাদের বিরুদ্ধে আবারও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (শিবগঞ্জ -সার্কেল) তানভীর হাসান বলেন, 'মাদকের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকি। আর এছাড়াও এ বিষয়ে তথ্য পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে'।
সোনাতলা সংবাদে লিখতে পারেন আপনিও। যে কোনও তথ্য ও ভিডিও দিন নিচের WhatsApp নাম্বারে। প্রয়োজনে আপনার নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মোবাইল: ০১৭৭৪৬৫০৬৭১
E-mail: sonatalasangbad@gmail.com