বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়া সোনাতলায় ভূয়া কাজীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী কাজী মোঃ জোবাইদুর রহমান । ঘটনাটি উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নে ঘটেছে । থানার অভিযোগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নে সরকারীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত জোবাইদুর রহমান কাজী হিসাবে দির্ঘদিন যাবত ওই এলাকায় মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রারে নিয়োজিত । তবে বেশকিছু দিন ধরেই উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের শালিখা গ্ৰামের মৃত ফজলু প্রধানের ছেলে মোঃ আব্দুল আলিম খাজা ও মোঃ সালজার রহমানের ছেলে মোঃ আঃ ছবুর প্রধান ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে খাজা নিজেকে কাজী পরিচয় দিয়ে মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রার কাজ কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছেন । এর ধারাবাহিকতায় গত ২রা জুলাই রবিবার বিবাদী খাজা ও ছবুর প্রধান মিলে ইউনিয়নের গজারিয়া গ্ৰামে বিবাহ রেজিষ্ট্রি করতে যায় । বিষয়টি জানতে পেরে কাজী জুবাইদুর রহমান ওই গ্ৰামে পৌছালে ভূয়া কাজী খাজা প্রধান জানতে পেরে কৌশলে পালাইয়া যায় । তাদের না পেয়ে কাজী জোবাইদুর রহমান ওই গ্ৰাম হতে ফেরার পথে শালিখা দক্ষিণপাড়ায় পৌছালে আঃ ছবুর প্রধান পথরোধ করা সহ মুহূর্তেই লোকজন ডেকে আক্রমন করে মারপিট করে জোবাইদুর রহমানকে । ঘটনার পর তিনি এ সংক্রান্তে আঃ আলীম খাজা ও আঃ ছবুর কে বিবাদী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । এ বিষয়ে কাজী জোবাইদুর রহমান সোনাতলা সংবাদকে বলেন, খাজা প্রধান সরকারীভাবে কোনো বৈধ কাজী না, তিনি চালাকি করে অন্য কোথাকার ভলিয়ম বই যোগার করে রেজিষ্ট্রি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে । তিনি নিয়োগপত্র দেখিয়ে বলেন সরকারের আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় হতে আমি নিয়োগ পেয়েছি এবং কার্যক্রমও চালিয়ে যাচ্ছি । তিনি আক্ষেপ করে বলেন প্রতিনিয়তই আমাকে লোকজন মারফত হুমকি দিচ্ছে খাজা প্রধানের পরিবারের লোকজন । বিষয়টি জানতে এলাকায় গিয়ে খাজা প্রধানকে পাওয়া যায়নি, তবে জানা যায় খাজা প্রধান উপজেলা পোষ্ট অফিসে চাকরি করে । শালিখা গ্ৰামের মোঃ ছাকোয়াত হোসেন, মোঃ দুলাল মিয়া বলেন, খাজা প্রধান কোন কাজীই না,তবে তিনি গায়ের জোরে এ কাজ করে যাচ্ছেন । উপজেলা পোষ্ট অফিসে গিয়েও খাজা প্রধানকে পাওয়া যায়নি । তবে পোষ্ট মাষ্টার মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, তিনি ৩রা জুলাই থেকে কর্মস্থলে নেই । ছুটি নিয়েছেন কি না জানতে চাইলে পোষ্ট মাষ্টার বলেন, আজ ৫শে জুলাই দুপুর তো পার হলো এখন পর্যন্ত কোন ছুটির আবেদন পাইনি ।
মুঠোফোনে মোঃ আব্দুল আলিম খাজার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি মধুপুর ইউনিয়নের প্রকৃত কাজী নয় স্বীকার করে বলছিলেন আমি মোঃ জাকিরুল ইসলাম নামের এক কাজীর সহকারী হিসেবে বিবাহ রেজিষ্ট্রি করি । এ সূত্র ধরে ওই কাজীর দেওয়া ফোন নাম্বারে কথা বললে, সেই জাকিরুল ইসলাম নিজেকে একজন আইনজীবী হিসেবে পরিচয় প্রদান করেন । তবে তিনি বলেন, খাজা প্রধান আমার সহকারী হিসেবে কাজ করে । তার কাছে প্রশ্ন ছিল আসলেই খাজা প্রধান কাজী, আইনজীবী সহকারী, না অন্যকোনো চাকরিজীবী, সে সময়ে ওই আইনজীবী বলেন আমি ব্যস্ত আছি পরে কথা বলবো,বলেই ফোন সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেয় । এদিকে ওই এলাকার অনেকেই প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন,খাজা প্রধান নিজেকে কখনো কাজী, কখনো চাকুরিজীবী, কখনো আইনজীবীর সহকারী বলে পরিচয় দেয় । সোনাতলা থানার এএসআই মোঃ নাসির উদ্দিন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তবে তদন্ত সাপেক্ষে ওসি স্যারের নির্দেশে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
Leave a Reply