স্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ার সোনাতলা পাকুল্যা ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য রাশেদকে মারপিটে করে হত্যার ঘটনায় ২০ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় নিহতের মা ওজেনা বেগম বাদী হয়ে এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় পাকুল্লা বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়ামুল কবির কে প্রধান আসামিসহ ২০ জন নামীয় ২০/২৫ জনকে অজ্ঞাত রেখে আসামি করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ঘটনার বেশ কিছুদিন পূর্বে বগুড়ার সোনাতলা পাকুল্লা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে বিএনপি'র দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় বেশ কিছুদিন যাবত উত্তেজনা বিরাজ করছিল। প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নিয়ামুল কবীর তাহার জ্যাঠাতো বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম জ্যাকিকে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিতে একক সিদ্ধান্তে এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে বহাল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিকঠাক করে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক বা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ কে কোন কিছু অবগত না করে বগুড়ার ডিসি অফিসে জমা প্রদান করেন। পরবর্তীতে উক্ত বিষয় নিয়ে এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
স্কুলের শিক্ষার্থীসহ তাদের অভিভাবকগণ এলাকার সর্বস্তরের লোকজন ২ ফেব্রুয়ারি ম্যানেজিং কমিটি বাতিলসহ প্রধান শিক্ষককে তার পদ হতে অপসারণের জন্য বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেন। এসময় পাকুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি'র সভাপতি আব্দুল হান্নান বাটালুসহ তার লোকজন শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করেন এবং মানববন্ধনে ব্যানার ছিড়ে ফেলে।
এ সময় যুবদল নেতা রাশেদ শিক্ষার্থীদের পক্ষে এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করে। সে সময় বাটালুসহ তার পক্ষের লোকজন রাশেদসহ তার সঙ্গীদের হত্যা করার হুমকি প্রদর্শন করে। পরবর্তীতে উক্ত বিষয়ে এলাকার লোকজনসহ শিক্ষার্থীগন ৪ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। এ ঘটনায় গত ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় সময় রাশেদ বিবাহ অনুষ্ঠানে দাওয়াত শেষে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক লিপন ও সাবেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জিএম আলী হাসান নারুনদের গাড়ি বহরে বাড়ি ফেরার পথে পাকুল্লা বাজারে পৌছিলে রাশেদকে দেখতে পেয়ে হত্যা করার জন্য পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ওৎ পেতে থাকা বাটালুলসহ তার লোকজন রাশেদের উপর হামলা করে।
প্রাণভয়ে রাশেদ দৌড়ে আব্দুল হামিদ রাজমিস্ত্রীর বাড়িতে লুকায় সেখানেই তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করে ফেলে রেখে যায় তারা। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ১০ ফেব্রুয়ারি রাশেদের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে তাকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে বাড়ি ফেরার উদ্দেশে রওনা করেন। পথিমধ্যে তার অবস্থান খারাপ হলে তাকে বগুড়া মফিজ পাগলার মোড় ইসলামিয়া হাসপাতালে নেয়।
৩ দিন চিকিৎসা চলাকালীন রাশেদের অবস্থা গুরুতর হলে ১৩ ফেব্রুয়ারি আবারো শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসা চলাকালীন ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকালে তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিলাদুন নবী সোনাতলা সংবাদকে বলেন, নিহতের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
সোনাতলা সংবাদে লিখতে পারেন আপনিও। যে কোনও তথ্য ও ভিডিও দিন নিচের WhatsApp নাম্বারে। প্রয়োজনে আপনার নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মোবাইল: ০১৭৭৪৬৫০৬৭১
E-mail: sonatalasangbad@gmail.com