আব্দুর রাজ্জাক, স্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ার সোনাতলায় রাস্তার অর্ধশতাধিক ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে সাবাড় করেছে প্রভাবশালী মহল। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করে দেয়। কর্তনকৃত গাছের ৮০টি গুঁড়ি মেম্বারের হেফাজতে বাকী গুড়িগুলো দেখা মিলে কর্পূর একটি 'ছ' মিলে। ঘটনাটি ঘটেছে ২৫মে শনিবার সকালে উপজেলার দিগদাইড় ইউনিয়নের কোয়ালীপাড়া গ্রামে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কোয়ালীপাড়া গ্রামের বাছুর মারা ব্রীজের কাছে রাস্তার ধারে পশ্চিম পাশে জমির মালিক ওই গ্রামের মৃত তোফাজ্জলের ছেলে নাজমুল হোসেনের লাগানো ইউক্যালিপটাস গাছ । সেই গাছগুলো তার মামা শ্বশুর শিহিপুর গ্রামের মৃত জয়নালের ছেলে বাঁধন কে কাঁটার নির্দেশ দেন। তার নির্দেশ ক্রমে বাঁধন গাছগুলো কাটতে থাকে।
গ্রামবাসী জনৈক এক ব্যক্তি সরকারি রাস্তার গাছ কাটা দেখতে পেয়ে স্থানীয় সংরক্ষিত ইউপি সদস্য মনোয়ারা বেগমকে অবগত করে। মনোয়ারা বেগম বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম টুল্লুকে জানান । তিনি তাৎক্ষণিক সহকারী কমিশনার ভূমি প্রতীক মন্ডল কে অবগত করেন। এসিল্যান্ড থানা উপ-পুলিশ পরিদর্শক এস আই জুলহাসকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে বলেন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়ে কর্তনকৃত ৮০টি গাছের গুঁড়ি একটি বাড়িতে ওয়ার্ডের মেম্বার লালনের হেফাজতে রেখে চলে আসে। পরবর্তীতে এসিল্যান্ড প্রতিক মন্ডল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাস্তার সীমানা মাফ যোগ করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন সার্ভেয়ারকে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য লালন বলেন, ইউএনও মহোদয়ের সাথে পরামর্শ করলে তিনি আমাকে মামলা করতে বলে। ওটা আমার ওয়ার্ডের ঘটনা না একথা বললে তিনি আমার চেয়ারম্যানের সাথে পরামর্শ করে কাকে দিয়ে মামলা করলে ভালো হবে সেটাই করতে বলেন। গাছের গুঁড়ি গুলো পাহারা দিতে সমস্যার কথা বললে ইউনিয়ন পরিষদে রাখার নির্দেশ দেন আমি তাই করেছি। পরে সেলিম মেম্বার বাদী হয়ে মামলা দেয়ার জন্য ইউএনও মহোদয়ের সাথে দেখা করেন পরে কি হয়েছে আমি তা জানিনা। এস আই জুলহাস গাছের গুঁড়ি গুলো আমার হেফাজতে রেখে গেছে।
সেলিম মেম্বার কে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বাদী হয়ে মামলা দেয়ার বিষয়ে ইউএনও মহোদয়ের নিকট বললে তিনি বলেন, তারা আমার কাছে এসেছিলো অনেক কান্নাকাটি করছে তাই ক্ষমা করে দিয়েছি । আর কখনো এমন হবেনা মর্মে বলে যায় বলে জানান। তিনি উল্টো আমাকে দোষারোপ করে আমি নাকি তাদের কাছে টাকা দাবি করেছি।
স্থানীয় সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মনোয়ারা বেগম বলেন, আমিও কিছু বুঝতে পাচ্ছি না, তবে শুনলাম মামলা এখনো হয়নি। অফিস নাকি ম্যানেজ করছে।
ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম টুল্লু জানান, গাছ কাটার খবর পেয়ে তাৎক্ষনাত এসিল্যান্ডকে অবগত করি। বর্তমামানে গাছের গুঁড়িগুলো পরিষদে রয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি প্রতীক মন্ডল জানান , ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি সীমানা মাফ যোগ করে সার্ভেয়ারকে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ নিয়েছি প্রতিবেদন এখনও দাখিল করেনি। দাখিল করলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরিনা শারমিন বলেন, গাছগুলো আমাদের হেফাজতে আছে। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো মামলা হয়নি তবে যৌথ তদন্ত দেয়া আছে, তদন্ত শেষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সোনাতলা সংবাদে লিখতে পারেন আপনিও। যে কোনও তথ্য ও ভিডিও দিন নিচের WhatsApp নাম্বারে। প্রয়োজনে আপনার নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মোবাইল: ০১৭৭৪৬৫০৬৭১
E-mail: sonatalasangbad@gmail.com