স্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বয়ড়া কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল ওয়াহেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর দুর্নীতি-অনিয়মের বিভিন্ন অভিযোগ তুলে এবং প্রতিকার চেয়ে মঙ্গলবার (০২মে) সকালে সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন একই কলেজের শিক্ষক-কর্মচারিদের পক্ষে ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক সুমন কুমার পাল।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, সোনাতলার বয়ড়া কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠানটির সূচনালগ্ন থেকে কর্মনিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করলেও ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত সোনাতলার সবচেয়ে পুরাতন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠাানটি থেকে এমপিও সুবিধার বাইরে অভ্যন্তরীন উৎসের আয় হতে তারা একেবারেই বঞ্চিত রয়েছেন। শিক্ষকদের অনুকূলে টিউশন ফি বরাদ্দ হলেও অদ্যাবধী শিক্ষদের সেটি প্রদান করা হয়নি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া ব্যবহারিক ফি’র একটি অংশ শিক্ষকরা প্রাপ্য হলেও তা থেকেও বরাবর তাদের বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ, ভর্তি ফিসহ প্রশংসাপত্র ও সনদপত্র উত্তোলন বাবদ তাদের নিকট অর্থ গ্রহণ করা হলেও তার কোন অংশ শিক্ষক-কর্মচারীদের দেয়া হয় না। বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্বেও অধ্যক্ষের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় তাঁর আপন ভাই, একই কলেজের প্রভাষক মোঃ আশরাফুল ইসলাম কলেজে নির্মিত বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র ভবনসহ টিনশেড আরেকটি ভবনের ৮ টি কক্ষ একটি কিন্ডার গার্টেন ( উদ্দিপ্ত বিদ্যানিকেতন) হিসাবে ব্যবহার করছেন। অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদ উচ্চতর স্কেল প্রদানের জন্য সহযোগিতার পরিবর্তে উৎকোচ দাবি করে বেশ কয়েকজন শিক্ষককে অর্থ প্রদানে বাধ্য করেছেন। এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশের আলোকে কলেজটিতে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিকট তিনি অবৈধভাবে অর্থ দাবি করেন ও গ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠানের নামে বাস ক্রয়ের ক্ষেত্রেও তিনি চরম দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে তৎকালীন সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যস্থতায় শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে মাসিক ভিত্তিতে প্রদানের সিদ্ধান্ত নিলেও ওই বছর জানুয়ারি ও ফেব্রæয়ারি মাসে বাড়িভাড়া হিসাবে ৫ শতাংশ মাসিক হারে প্রদান করে তালবাহানার মাধ্যমে তা বন্ধ করেন। পুনরায় দাবির প্রেক্ষিতে ২০২২ সালে ৬ মাসের ও ২০২৩ সালে জানুয়ারি মাসের বাড়িভাড়া (শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে মাসিক ভিত্তিতে) প্রদান করে আবারও তা বন্ধ করে দেন। সোনাতলা উপজেলার পুরাতন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে এ কলেজটির অধ্যক্ষের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত দুর্নীতি ও অনিয়মকে অনুসরণ করছে উপজেলার অন্যান্য কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।
লিখিত অভিযোগে দুর্নীতি-অনিয়মের সুরাহা কামনা করা হয়েছে এবং বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারিদের ন্যয্যতা নিশ্চিতকরণের আবেদন করা হয়েছে।
অভিযোগের অনুলিপি একইসঙ্গে সচিব, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগ, মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, বগুড়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি, বগুড়া, জেলা শিক্ষা অফিসার, বগুড়া ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, সোনাতলা, বগুড়াকে প্রদান করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে বয়ড়া কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল ওয়াহেদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদা পারভীন অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
সোনাতলা সংবাদে লিখতে পারেন আপনিও। যে কোনও তথ্য ও ভিডিও দিন নিচের WhatsApp নাম্বারে। প্রয়োজনে আপনার নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মোবাইল: ০১৭৭৪৬৫০৬৭১
E-mail: sonatalasangbad@gmail.com