সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সোনাতলায় পুলিশের এএসআই রশিদুল ইসলামের পিটুনীতে এক কলেজ শিক্ষক গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে। ওই শিক্ষক একটি শিক্ষক পরিবারের সন্তান হওয়া স্বত্তেও ছাগল চোর বলে সম্বোধন করায় এলাকাবাসির মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি।
এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বেলা আনুমানিক ২টার সময় সোনাতলা পৌর এলাকার গড়ফতেপুর এলাকার বাসিন্দা ও সোনাতলা সিনিয়র ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার আরবী বিভাগের সাবেক সহকারী অধ্যাপক মৃত মাওলানা আব্দুস সাদেকের ছেলে ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাড়া মাদ্রাসার ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক মোঃ আব্দুল আলিম (৪৫) দুটি ছাগল নিয়ে মাঠে চড়াতে যাওয়ার পথে পৌর এলাকার গড়ফতেপুর এলাকার নুরু মাষ্টারের বাড়ির নিকট পৌছিলে পেছন দিক থেকে আসা সোনাতলা থানার এ এস আই রশিদুল ইসলাম ওই প্রভাষককে লক্ষ্য করে প্রশ্ন করে তুই কে? তোর নিকট ছাগল কেন? তুই কি ছাগল চোর? পুলিশের এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে ওই শিক্ষকের আত্মসম্মানে আঘাত হানে। এ সময় ওই শিক্ষক পুলিশকে উদ্দেশ্য করে এমন প্রশ্ন করার কারন জানতে চাইলে ওই পুলিশ আকস্মিক ভাবে উত্তেজিত হয়ে কলেজ শিক্ষকের উপর ফিল্মি স্টাইলে (সিনেমা স্টাইলে) তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখন ওই শিক্ষক রাস্তার পাশে রাখা ইটের উপর পড়ে গেলে শিক্ষকের গলায় থাকা গামছা দিয়ে তার গলা পেচিয়ে ধরে। এছাড়াও তার মাথায় আঘাত লাগায় মাথা ফেটে যায়। এতে করে ওই শিক্ষক গুরুতর আহত হয়েছে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সোনাতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। বর্তমানে তার অবস্থা আশংকাজনক।
এ বিষয়ে ওই কলেজ শিক্ষকের ছোট বোন মুন্নুজান জানান, তাদের ৮ ভাই বোনের মধ্যে ৫ ভাই বোন শিক্ষক। এছাড়াও তার বাবা ছিলেন একজন কলেজ শিক্ষক। তার ভাইকে চোর বলে ট্রিট করায় তাদের শুধ ব্যক্তিগত নয় পারিবারিক সম্মানেও আঘাত হেনেছে।
এ ব্যাপারে ওই কলেজ শিক্ষক আব্দুল আলিম জানান, বেলা ২ টার সময় সে যখন বাড়ির পোষা পালিত ২টি ছাগল নিয়ে মাঠে খাওয়ানোর জন্য যাচ্ছিল, ঠিক সেই মুহুর্তে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে পুলিশ সদস্য রশিদুল ইসলাম তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে প্রথমে এসে ছাগল চোর বলে ট্রিট করে। এরপর সিনেমার মতো ফিল্মি স্টাইলে তার উপর হামলা চালায়। এছাড়াও ওই পুলিশ সদস্য তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় গামছা পেচিয়ে শ^াসরোধ করে রাখে। এছাড়াও হাতে থাকা কি একটা জিনিস দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। এতে করে আমার মাথা ফেটে যায়। আমি ওই পুলিশ সদস্যের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে ওই পুলিশ সদস্যের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায় নি। তবে এ ঘটনার পর থেকে সোনাতলা থানার পুলিশ সদস্যদেরকে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য দেন দরবার করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে সোনাতলা থানার ওসি জালাল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এটি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। বিষয়টি আমরা স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করার জন্য একজন কাউন্সিলরকে দায়িত্ব দিয়েছি। রাত ১০ টায় এ বিষয়ে থানায় দু’পক্ষকে বসার ব্যবস্থা করেছি।
উল্লেখ্য, এ ঘটনার পর থেকে ওই পুলিশ সদস্য কারও চোখে পড়েনি।
Leave a Reply