সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় আব্দুল আজিজ নামের এক ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের দালিলিক প্রমান পত্র ও সহ যোদ্ধাদের সমর্থন থাকলেও একটি অদৃশ্য কারণে আজও তার নাম মুক্তিযুদ্ধের চুড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এ বিষয়ে ওই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বালুয়া ইউনিয়নের পাতিলাকুড়া গ্রামের মৃত আব্বাস আলী মন্ডল ও মৃত হালিমা বেগমের ছেলে আব্দুল আজিজ নিজের জীবন বাজি রেখে, দেশের স্বাধীনতাকে পাক হানাদার বাহিনীর নিকট থেকে ছিনিয়ে আনতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে নিজেকে যোদ্ধা হিসেবে তৈরি করতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যান। সেখানে দীর্ঘ প্রায় ৯০ দিন অস্ত্র চালানোর উপর বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে এসে পাকহানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ২নং সেক্টরের অধীনে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাকহানার বাহিনীর সাথে কখনও মুখোমুখি আবার কখনও নিজেদেরকে আড়াল করে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এভাবে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করার পর সেইদিন যারা লাল সবুজের পতাকা উপহার দিতে পেরেছেন। স্বাধীনতার দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও আজ অবধি তিনি মুক্তিযুদ্ধের চুড়ান্ত তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করাতে পারেননি। অভাব অনটনের সংসারে স্ত্রী ও তিন ছেলে ও এক মেয়ের পরিবারে যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরায় সেই অভাবের সংসারে কখনও অনাহারে, কখনও অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ আবেগ আপ্লুত কন্ঠে বলেন, নিজের জীবন বাজি রেখে দেশের স্বাধীণতাকে পাক হানাদার বাহিনীর নিকট থেকে ছিনিয়ে আনতে সেইদিন যারা অস্ত্র কাঁধে নিয়েছিল তাদের মধ্যে আমিও একজন। এ বিষয়ে আমার দালিলিক প্রমানপত্র থাকা সত্তে¡ও দীর্ঘ সময় একটি মহলের ষড়যন্ত্র চক্রান্তের স্বীকার তিনি। তিনি আরও জানান, ভারতের শিলিগুড়ি ও পানিঘাটা নামক স্থানে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে এসে ২নং সেক্টরের অধীন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশারফের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেয়। স্বাধীনতার দীর্ঘ প্রায় ৪৯ বছরেও তিনি পাননি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। তিনি আরও জানান, সে দীর্ঘদিন ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সকল মূল্যবান কাগজপত্র তিনি ওই সময় হারিয়ে ফেলেছেন। ফলে দীর্ঘ সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধের তালিকা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, এখন আমি আমার জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছি। তাই আমার জীবদ্দশায় মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃতি দেখে যেতে চাই। এজন্য তিনি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সোনাতলা উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল আজিজকে আমি চিনতে পাচ্ছিনা। মুক্তিযোদ্ধার স্বপক্ষে কোনও কাগজপত্র নিয়ে আসলে তা দেখা হবে।
সোনাতলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাদিয়া আফরিন বলেন, অফিসে কোনও আবেদন করা হয়েছে কিনা জানানেই। সে আবেদন করে থাকলে তা যাচাই বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সোনাতলা সংবাদে লিখতে পারেন আপনিও। যে কোনও তথ্য ও ভিডিও দিন নিচের WhatsApp নাম্বারে। প্রয়োজনে আপনার নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মোবাইল: ০১৭৭৪৬৫০৬৭১
E-mail: sonatalasangbad@gmail.com