সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়া সোনাতলা উপজেলায় সেবা নেই সমাজসেবা অফিসে। বকশিশের নামে ঘুস বাণিজ্য চলছে রমরমা। সেবা নিতে আসা জনসাধারণরা হয়রানির স্বীকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
গতকাল রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) পৌর এলাকার বোচাপুকুর নামক স্থান থেকে আলেয়া বেগম নামে সেবা নিতে আসা এক বিধবা মহিলা ৫/৬মাস পূর্বে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে দুই হাজার টা ঘুষ দেন। তার ভাতার কাজ না হওয়ায় চায়ের দোকানে ফেরত দেওয়া হয় সেই কাজের দুই হাজার টাকা।
আবেগে বিধবা মহিলা সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর আগে স্বামী মারা গেছে। পায়ের দুটো বুরো আঙ্গুলের সমস্যা ঠিকমত চলাফিরা করতে পারি না। একটা মাত্র মেয়ে তাকেও বিয়ে দিয়েছি। আমার কামায় রোজগার করার মতো কেউ নাই। শুনলাম শেখ হাসিনা সরকার নাকি প্রতিবন্ধিদের ভাতা দিচ্ছে। তাই ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকফি আর ছবি নিয়ে উপজেলাত সমাজ সেবা অফিসে আসি। আসার পর অফিসের ওমর ফারুক নামে লোকের সাথে দেখা করি। সে কাগজপত্র নেয় আর দুই হাজার টাকার কথা বলে। টাকা দিলেই নাকি আমার ভাতা হয়ে যাবে। অনেক কষ্ট করে ধার দেনা করে দুই হাজার তাকে দেই। কিন্তু আমাকে খালি আশ্বাস দেয় হবে কিন্তু কোন কাজ হয়না। এই অফিসে ঘুরতে আসতে আমার ভালো লাগেনা। তাই মনের ক্ষোভে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একা একা বলতে বলতে যাচ্ছি টাকা দিয়েও কোন ভাতার কাট পাওয়া যায়না। একথা ওমর ফারুকের বিশ্বস্ত লোক শুনতে পায়। বিষয়টি অফিস সহায়ক ওমর ফারুককে গিয়ে বললে সে ক্ষিপ্ত হয়। সেই বিস্বত্ব লোক ডেকে নিয়ে সেবা নিতে আসা আলেয়া বেগমকে দীর্ঘ এক ঘন্টা চায়ের দোকানে অপেক্ষা করতে বলে। সেখানে আলেয়া বেগমের কাছ নেওয়া দুই হাজার টাকা সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ওমর ফারুক ফেরত দিয়ে আলেয়া বেগমকে ধমক দিয়ে অফিসে চলে যায়।
এদিকে আলেয়া বেগম দুই হাজার টাকা হাতে নিয়ে অশ্র ভেজা চোখ মুছতে মুছতে বাড়ি রওনা হয়। ঘটনাটি সাংবাদিকদের নজরে আসলে আলেয়া বেগম জিজ্ঞেসা করলে লোকটি আপনার কে হয়। আলেয়া বেগম সাংবাদিকদের সব কথা খুলে বলে।
এব্যাপারে অফিস সহায়ক ওমর ফারুকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি কোন টাকা গ্রহন করিনি রব্বানী নামে এক ছেলে টাকা দিয়েছে। সে আমার কাছে রাখছিলো আমি ওর মাধ্যমে আলেয়া বেগমকে ফেরত দিয়েছি আজ।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের সুপার ভাইজার রয়েলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন সবকিছু শুনেছি আমাদের অফিসে কাজের কোন ফিস নেওয়া হয়না। মহিলার সাথে হয়েছে তা নিন্দনিয়। এ বিষয়ে আপনারা জেলা সমাজসেবা পরিচালকের সাথে কথা বলতে পারেন।
এ বিষয়ে জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার উপ- পরিচালক আবু সাইদ মোহাম্মাদ কাউছার জানান, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে মাত্র জানতে পারলাম সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগী মহিলা লিখিত অভিযোগ করলে অফিসিয়াল ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply