1. sonatalasangbad@gmail.com : সোনাতলা সংবাদ :
শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সোনাতলায় অগ্নীকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ভ্যান চালককে গরু দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান টুল্লু সোনাতলায় নাম্বার বিহীন ট্রাকের যন্ত্রাংশ আলাদা করার সময় দুইজন আটক বগুড়ায় ধান কেটে মজুরি না পাওয়ায় ৫ দিনমজুরের থানায় অভিযোগ গাবতলীর বাগবাড়ীতে শহীদ জিয়া কলেজ সরকারীকরণের দাবীতে লিফলেট বিতরণ কাহালুতে আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেফতার কাহালুতে দুই ব্যবসায়ীকে ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা বগুড়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষা শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সোনাতলায় ১০২ মুক্তিযোদ্ধাকে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চিঠি সারিয়াকান্দিতে জমিজমা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৫ জন আহত সোনাতলায় এক সন্তানের জননীকে নিয়ে যুবক উধাও, থানায় অভিযোগ

সোনাতলা উপজেলা সাধারণ পাঠাগার শুধু সাইনবোর্ডেইঃ দেখে বোঝার উপায় নেই

  • রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩
  • ১৫৩
আব্দুর রাজ্জাক, সোনাতলাঃ বগুড়ার সোনাতলায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও স্থানীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের বিশেষ প্রচেষ্টায় ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘উপজেলা সাধারণ পাঠাগার’। প্রায় ৩৩ বছরের পুরনো এ পাঠাগারটি সোনাতলা উপজেলা চত্ত্বরের ইউএনওর বাসভবনের সামনে অবস্থিত। এই পাঠাগারটি রয়েছে প্রায় আড়াই হাজারের মতো বই রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার এ পাঠাগারটি চরম অবহেলা ও অযত্নে রয়েছে। তালা দেওয়া গেটের ভিতর থেকেই দেখা যায় ভিতরের দৃশ্য। পাঠাগার ভবনের বারান্দার গেটে তালা দেওয়া থাকলেও ভিতরে ঢুকার গেট একদম খোলা। দরজা দিয়ে একটু টানা পাড়তেই দেখা গেলো ভাঙাচোরা চেয়ার আর ধুলোয় জমানো বুক সেলফ। জানালাগুলোরও পাল্লা খোলা। জানালার ভিতর দিয়ে তাকাতেই মনে হয় ভুতুরে বাড়ী। অথচ ইউএনওর বাসভবনের সামনেই এই পাঠাগার।
পাঠাগারে ঢোকার জন্য এই প্রতিবেদক ফোন দেয় উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাঈদা পারভীনকে। তিনি বলেন, ‘পাঠাগারের চাবি রয়েছে বাসভবনের দায়িত্ব পালন করা আনসার সদস্যর কাছে’। আনসার সদস্যকে চাবির কথা জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, ‘চাবি আমার কাছে নেই। আছে মিস্ত্রির কাছে’। কোন মিস্ত্রির কাছে জিজ্ঞাস করলে বলেন, ‘ইউএনও স্যারের বাসভবন নতুনভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানকার কাজ যে মিস্ত্রিরা করছে, তার কাছে’। মিস্ত্রির কাছে চাবি থাকার কারণ জানতে চাইলে, ওই আনসার সদস্য বলেন, ‘অই নির্মিত বাসভবনের মালামাল রাখা হয়েছে লাইব্রেরীর ঘরে। এ জন্য তাদের কাছে চাবি রয়েছে’।
আনসার সদস্য প্রতিবেদককে বলেন, ‘আপনি স্যারের কাছ থেকে অনুমতি নিন, আমি মিস্ত্রির কাছ থেকে চাবি এনে পাঠাগার খুলে দিচ্ছি’। পরে আবার ইউএনওকে ফোন দিলে তিনি আনসার সদস্যকে পাঠাগারটি খুলে দিতে বলে।
পাঠাগারটি খোলার পর দেখা গেলো পাঠাগারের বারান্দাতে ৫০-৬০টি সিমেন্টের বস্তা রাখা হয়েছে। শুধু তাই না স্যালো মেশিন, কয়েকটি রঙের বালতি ও পাইপও রাখা হয়েছে বারান্দায়। এগুলো ঠেলে পাঠাগারের দরজা দিয়ে সামনে এগোতেই নাকে ভেসে আসলো তীব্র কটু গন্ধ। সম্ভবত ইঁদুর মরে পচে যাওয়ার গন্ধ। আর মাথা আটকে গেলো মাকড়শার জালে।
ভিতরে প্রবেশের পর দেখা গেলো লাইব্রেয়ীয়ানের টেবিল চেয়ার। টেবিলের উপর ময়লায় মেটে কালার হওয়া কয়েকটি পেপার ও চেয়ারের ধুলো আর মাকড়শার জাল। দেখে মনে হয় না যে দুই চার বছরের মধ্যে খোলা পড়েছে এই লাইব্রেরী। বসে বই পড়ার টেবিলে ধুলোর আস্তরণ ও কয়েকটি চেয়ার যা সম্পুর্ণ বসার অনুপোযোগী। বুক সেলফগুলোতে বই থাকলেও তাতেও ঝুলছে তালা।
জানা যায়, আজ থেকে কয়েক বছর আগেও এখানে নিয়মিত পাঠকদের আড্ডা হতো। প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকতো পাঠাগারটি। পাঠকরা বিভিন্ন রকমের বই-পত্রিকা পড়তো। জ্ঞান আহরণ করতো। কিন্তু আজ এর পরিস্থিতি দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এখানে মানুষ বইপত্র পড়ে।
সিজুল ইসলাম নামের এক পাঠক ও সাংস্কৃতিককর্মী জানায়, ‘আমি ২০০৮-০৯ সালের দিকে ছাত্রাবস্থায় উপজেলা পাঠাগার এবং বিজ্ঞানাগারে নিয়মিত যেতাম। নজরুল সম্পর্কে অল্প বিস্তর জেনেছি ওখানকার বই পড়েই’।
তিনি আরও বলেন, ‘গত ঈদে বাড়ি গিয়ে দেখলাম পাঠাগারটি এখন মৃতপ্রায়। উপজেলা প্রশাসনের অবজ্ঞা এবং অবহেলার কারণে এটি হয়েছে বলে মনে করি’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাঠাক জানায়, ‘পাঠাগারটি জাতীয় গ্রন্থাগারের নিবন্ধনভুক্ত। প্রতিবছরের বই কেনার জন্য এখানে বরাদ্দ আসে। তবে নতুন বইতো আমরা পাঠাগারে দেখিনা! গতবছরেও প্রায় ৫১ হাজার টাকা বরাদ্দ এসেছে। জানিনা তাও কোন অজানা কারনে পাঠাগারটি বন্ধ রয়েছে’।
পাঠাগারটির সাধারণ সম্পাদক ও সরকারি নাজির আখতার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ রফিকুল আলম বকুল মুঠোফোনে জানায়, ‘আমি পাঠাগার কমিটিতে ছিলাম। তা প্রায় সাত-আট বছর আগের কথা। এখন আমার তেমন মনেও নেই। কমিটি এখনও আছে কিনা তা আমি জানি না। তবে দীর্ঘদিন ধরে পাঠাগারটি বন্ধ রয়েছে তা জানি। আর এইটা সোনাতলা পাবলিক পাঠাগার না, এইটা উপজেলার পাঠাগার। এটা চালু করা, এটা সংস্কার করা বা এর ব্যয়ভার মিটানোর ব্যবস্থা করা সব ইউএনওরা করবে। আমিও চাই পাঠাগারটি দ্রুত সচল করা হোক’।
খোজ নিয়ে জানা যায় পাঠাগারটির সভাপতি পদাধীকার বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার। পাঠাগারটির অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাঈদা পারভীন বলেন, ‘আমি যোগদানের পর থেকে দেখছি পাঠাগারটি তালাবদ্ধ। বর্তমানে পাঠাগারে কোনো লাইব্রেয়ীয়ান নেই। এজন্য কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। আশাকরি খুব দ্রুত লাইব্রেয়ীয়ান নিয়োগ ও পাঠাগারটি সংস্কার করে পুর্নাঙ্গ কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা গ্রহন করব’।
উপজেলা সাধারণ পাঠাগারটি দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ থাকায় সাধারণ পাঠক পাঠাগারের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্থানীয় পাঠকদের দাবি পাঠাগারটি আবার সংস্কার করে পুনরায় প্রাণ ফিরিয়ে দেয়া হোক। তাহলে তরুণ প্রজন্ম আবার বইমুখী হবে। তাদের জ্ঞান চর্চার দ্বার উন্মোচিত হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

নিউজে সর্বশেষ

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট