সোনাতলা সংবাদ ডেস্কঃ বগুড়ায় বন্ধুর ছুরিকাঘাতে হৃদয় আকন্দ (২১) নামে এক যুবক খুন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফুলবাড়ি মধ্যপাড়ায় তাকে ছুরিকাহত করা হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। হৃদয় ওই এলাকার বাবু আকন্দের ছেলে।
নিহত হৃদয়ের চাচা ডাবলু আকন্দ জানান, একটি মোবাইল ফোনের মালিকানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে বাড়ি থেকে সরিষা ক্ষেতে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে হৃদয়কে উপর্যুপরীভাবে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। বন্ধু রবিনের নেতৃত্বে ৮-১০ যুবক হৃদয় হত্যাকান্ডে অংশ নেয় বলে তারা তথ্য পেয়েছেন। তিনি আরও জানান, হৃদয় দোকান কর্মচারী। বগুড়া নিউ মার্কেটে একটি দোকানে সে কাজ করতো।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে ফুলবাড়ি মধ্যপাড়ায় বাড়ি থেকে হৃদয়কে ডেকে নিয়ে যায় বন্ধু রবিনসহ কয়েকজন। এরপর তারা তাকে বাড়ির অদূরে একটি সরিষা ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে তার কাছে একটি মোবাইল ফোন দাবি করে। এরপর ওই মোবাইল ফোনের মালিকানা নিয়ে হৃদয়ের সাথে বন্ধু রবিন ও অন্যান্য বন্ধুর সাথে বিরোধ বাধে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয় তাদের মধ্যে। এক পর্যায়ে হৃদয়কে ছুরিকাঘাত করে চলে যায় বন্ধুরা।
পরে লোকজন গুরুতর আহতাবস্থায় হৃদয়কে উদ্ধার করে প্রথমে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে তার অবস্থার উন্নতি না হলে তাকে সেখান থেকে বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বগুড়ার সদর থানার ওসি এসএম মঈন উদ্দিন জানান, হত্যাকান্ডের শিকার হৃদয় ও তার বন্ধুরা একটি অপরাধী চক্রের সদস্য। গ্রুপটি চুরি, ছিনতাই, মাদকসেবন ও মাদক বিক্রিসহ নানা অপরাধের সাথে জড়িত। মাদকসেবন ও একটি মোবাইল ফোনের মালিকানা নিয়ে বিরোধের জেরে হৃদয়ের বন্ধুরা তাকে ছুরিকাঘাত করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে বেলা ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ওসি আরও বলেন, এটি মূলত বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন। হৃদয় খুনের ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা গেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
ফুলবাড়ি ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আলমাস আলী সরকার বলেন, ছিনতাইকৃত একটি মোবাইল ফোনের মালিকানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে। তথ্য যাচাই করে দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
ফুলবাড়ি ফাঁড়ির এসআই আব্দুর রহমান বলেন, হৃদয়ের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়না তদন্তশেষে তার লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, হৃদয়ের নিতম্বের তিনটি স্থানে ছুরিকাঘাত করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে হৃদয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
Leave a Reply