বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষীমন্ডপ গ্রামে গত ৮ জুলাই রাতে, শ্বশুর আফতাব উদ্দীন ও পুত্রবধু রিভাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় ডাকাত সর্দারসহ ৩ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল ঢাকার কমলাপুর রেল ষ্টেশন ও কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছে থেকে স্বর্নের কানের দুল, সিটিগোল্ডের চুরি, দুটি আংটি, একটি হাতঘরি ও নগদ সারে সাত হাতার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, দুপচাচিয়া উপজেলার বেরুঞ্জ গ্রামের আব্দুল করিমের পুত্র আব্দুল হাকিম (৩৪), লক্ষীমন্ডপ গ্রামের মৃত- মকবুল হোসেনের পুত্র আব্দুল মান্নান (৫০) ও আদমদিঘী উপজেলার বাশিকোড়া গ্রামের মৃত- লছির আকন্দের পুত্র রফিকুল ইসলাম (৪১)।
১৫ জুলাই মঙ্গলবার বিকেলে বগুড়ার অপরাধ বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান, ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায়।
তিনি বলেন গ্রেফতারকৃত আব্দুল মান্নান, নিহত আফতাব উদ্দীনের সেচ পাম্পে কাজ করতেন। কিন্তু ডাকাতিসহ তার নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড দেখতে পেয়ে মান্নানকে উক্ত কাজ থেকে বাদ দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আফতাবকে শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যে ডাকাত সর্দার আব্দুল হাকিমসহ অন্যান্য ডাকাতদের সাথে পরিকল্পনা করে মান্নান। এর পর ৮ জুলাই রাতে বাড়িতে ঢুকে ঘরের দরজায় গিয়ে ডাকলে, আফতাব হোসেন দরজা খুলে দিতেই লাঠি দিয়ে চোখের উপর আঘাত করে। এসময় আফতাব মাটিতে লুটে পরলে তার পরহাত-পা রশি দিয়ে বেধে মুখের মধ্যে শাড়ি কাপর গুজে দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এর পর রিভার কক্ষে ঢুকে তার হাত-পা বেধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ সময় রিভার ছোট মেয়ে ঘটনাটি দেখে ফেলে। তখন ডাকাতরা বাচ্চাটিকে চোখ বন্ধা করতে বললে শিশু বাচ্চাটি চোখ বন্ধ করে। তখন তার গলায় থাকা চেন খুলে নেয়। ছোট মেয়ে বাচ্চাটি এখন পর্যন্ত অসুস্থই রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন ক্লুলেস এই হত্যা কান্ডের পর থেকেই আমাদের পুলিশ, তথ্য প্রযুক্তিসহ অন্যান্য গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে। এক পর্যায়ে ১৪ জুলাই রাত সারে বারোটার দিকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ডাকাত সর্দার আব্দুল হাকিম ও হান্নানকে গ্রেফতার করা হয়। এবং একই রাতে কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানাধীন চর জামাল গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
ডাকাত সর্দার আব্দুল হাকীমের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে চুরি, ডাকাতি ও জুয়াসহ ৭টি মামলা রয়েছে। এছাড়া গ্রেফতারকৃত অন্য আসামী রফিকুলের বিরুদ্ধে চুরি ও মাদকসহ দুটি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে উক্ত মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হবে এবং পলাতক ডাকাতদেরকে গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যহত আছে।
Leave a Reply