সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সোনাতলায় সুদের টাকা দিতে দেরি হওয়ায় মাহাবুর রহমান নামের এক গৃহস্থের বাড়িতে ঢুকে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও সুদসহ আসল টাকা ফেরত না দিলে মারপিটের হুমকীও প্রদান করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় মাহাবুর রহমান বাদি হয়ে দুই জনকে মুল আসামি সহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগসুত্রে জানাযায়, উপজেলার তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের উত্তর মহেশপাড়া গ্রামের মৃত খয়রতজ্জামান সরকারের ছেলে মাহাবুর রহমান সরকার তার ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য একই গ্রামের কফিল উদ্দিন বেপারীর ছেলে মোঃ আজাদুল ইসলামের নিকট হতে গত ৩ বছর পুর্বে সুদের উপর ৩০ হাজার টাকা নেয়। এরপর সুদে আসলে দুই বছরে প্রায় ৮০ হাজার টাকা দেয়। কিন্তু তারপরও আজাদুল মাহাবুরের কাছ থেকে জোড়পুর্বক ৫০ হাজার টাকা পায় মর্মে স্ট্যাম্প পেপারে স্বাক্ষর নেয়। এরপর আজাদুলের সুদের টাকার চাপে মাহাবুর তার পরিবার নিয়ে ঢাকা শহরে চলে যায়।
মাহবুর অভিযোগে আরও জানায়, গত ১৬/০৯/২০২২ইং তারিখে ঢাকা থেকে গ্রামে এসে দেখেন তার বাড়িঘর ভাঙ্গা এবং ঘরের ভেতরে থাকা খাট, সুকেছ, টেবিল, আলমারি, চেয়ার ও বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করা। এতেকরে তিনি তার চাচাত ভাইকে জিজ্ঞাসা করেন কিভাবে এমন হলো আর কে করেছে। তখন তার ভাই ও প্রতিবেশিরা এগিয়ে গিয়ে উপরোক্ত বর্ননা দিয়ে বিষয়টি খুলে বলে তাকে। এসময় মাহাবুর বিষয়টি আমজাদকে বলতে গেলে আমজাদ তার উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং বলে আমার পাওনা টাকা ফেরত দেসনি তাই তোদের বাড়িঘড় ভাংচুর করেছি। এসময় পুর্বে ৮০ হাজার টাকা দিয়েছে সেই কথা বলতে গেলে আজাদুল ও তার স্ত্রীসহ অন্যান্য সহযোগিরা হাতেকরে বাশের লাঠি, কাঠের বাটাম, সাবল নিয়ে মাহাবুর ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের উপর হামলা করে। এতেকরে তারা প্রান রক্ষার ভয়ে চিৎকার চেচামেচি করলে আসপাশের লোকজন ছুটে আসে। এসময় আমজাদ ও তার লোকজন মাহবুর ও তার পরিবারের লোকজনদের বিভিন্ন প্রকার হুমকী ও প্রান নাশের ভয় প্রদান করে পালিয়ে যায়।
এবিষয়ে মাহবুর জানান, একদিকে সংসারের অভাব আর অন্য দিকে মাস পার হতে না হতেই সুদখোর আমজাদের চাপ। তার সুদের টাকা দিতে দিতে আমি খান্ত হয়ে পরেছি। ছেলের বিদেশ যাওয়ার জন্য তার নিকট থেকে ওই টাকাগুলো নিয়েছিলাম। অবশেষে বাড়িঘর ছেরে পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে যাই। সেখানেও শান্তিতে থাকতে পারিনি আমি। ফোনের পর ফোন আর নানা ধরনের হুমকী। তার অত্যাচারে অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ভিটাবাড়ি বিক্রি করে তার এই সুদের টাকা ফেরত দেবো। ঠিক তখনই জানতে পারি আজাদুলে এই অপকর্মের কথা।
এসময় এলাকার অনেকেই জানান, আজাদুল একজন সুদখোর। সে এলাকার মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে টাকার বিনিময়ে সুদ নেয়। তবে মাহবুরের সাথে ঘটেযাওয়া বিষয়টি আসলেই নিন্দনীয় বলে দুঃখ প্রকাশ করেন অনেকেই।
এদিকে আজাদুলের সাথে কথা বললে তিনি বাড়ির বেড়া কেটে ফেলার কথা স্বিকার করলেও জিনিসপত্র ভাংচুরের কথা অস্বিকার করেন।তবে তিনি মাহবুবের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা না হলেও আসল টাকা পাবার দাবি জানান।
এবিষয়ে সোনাতলা থানার অফিসার ইনচার্জ সৈকত হাসানের সাথে কথা বললে তিনি অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply