বদিউদ-জ্জামান মুকুলঃ বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বালুয়া ইউনিয়নের উত্তর আটকরিয়া গ্রামে দীর্ঘদিন যাবত শ্যালো মেশিন দিয়ে আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক ভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩ শতাধিক বসতবাড়ি ও জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক।
বগুড়ার সোনাতলা পৌর এলাকার কামারপাড়া এলাকার শাহিন মিয়া নামের এক বালু ব্যবসায়ী পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর যাবত উপজেলার বালুয়া ইউনিয়নের উত্তর আটকরিয়া গ্রামে পুকুর খননের নামে শ্যালো মেশিন দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করে তার ব্যবসা নির্বিগ্নে চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে ওই এলাকার প্রায় তিন শতাধিক বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়াও উত্তর আটকরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের এক চতুর্থাংশ ও বালুয়া-উত্তর আটকরিয়া পশ্চিম পাড়া সড়কটির বেশিরভাগ একটি পুকুর গিলে ফেলেছে। এছাড়াও শতশত একর আবাদি জমি পুকুরে পরিনত হয়েছে। ফলে ওই এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য সহ আবাদি জমি কমতে শুরু করেছে।
এ বিষয়ে উত্তর আটকরিয়া গ্রামের সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা ও বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুল আজম টুকু সরকার জানান, একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন যাবত পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুকুর খননের নামে শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে সংশ্লিস্ট এলাকার প্রায় তিন শতাধিক বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়াও উত্তর আটকরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক চতুর্থাংশ একটি পুকুর গিলে ফেলেছে। এছাড়াও বালুয়া-উত্তর আটকরিয়া পশ্চিম পাড়া সড়কটির একাংশ পুকুরের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে রাতের অন্ধকারে মাঝে মধ্যেই উক্ত স্থানে সিএনজি, অটোরিকশা, ভ্যান ও মোটর সাইকেল দূর্ঘটনার কবলে পড়ে। সেই সাথে পথচারীরা দূর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
এ দিকে একই এলাকার নুরুল আমিন নামের এক ব্যক্তি জানান, এটি একটি আবাসিক এলাকা। এই এলাকায় প্রায় তিন শতাধিক বসতবাড়ি রয়েছে। দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর যাবৎ একটি প্রভাবশালী মহল প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুকুর খননের নামে নির্বিগ্নে শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে বসতবাড়িগুলোতে ফাটল ধরেছে। যেকোন সময় প্রাকৃতিক দূর্যোগ ভুমিকম্পের ফলে দেবে যেতে পারে বিস্তৃর্ণ এলাকায় অবস্থিত বসতবাড়ি ও গাছপালা।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী আরও জানান, বালু উত্তোলনকারীদের হুমকি ধামকিতে কেউ মুখ খোলার সাহস রাখে না। এ বিষয়ে কেউ মুখ খুললেই তাকে নানা ভাবে হয়রানীর স্বীকার হতে হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ আহমেদ জানান, এটি একটি আবাসিক এলাকা। দীর্ঘদিন যাবত বালু উত্তোলনের ফলে বিস্তৃর্ণ এলাকার আবাদি জমি পুকুরে পরিনত হচ্ছে। ফলে দিন দিন সংশ্লিষ্ট উপজেলায় আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে সোনাতলা থানার ওসি সৈকত হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে কেউ সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপরদিকে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন জানান, আমরা প্রতিনিয়ত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে এ ধরনের অবৈধ শ্যালো মেশিন আটক করছি। তবে ওই এলাকার কেউ এখনও অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply