বায়েজীদ (পলাশবাড়ী) গাইবান্ধা : গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন ও এর আশেপাশের এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা একটি নৌকা। এপার ওপার মিলে অন্তত তিনটি উপজেলার ৫০-৬০ টি গ্রামের প্রায় লাখো মানুষ ঋষির ঘাটের করতোয়া নদীর উপর দিয়ে নৌকায় যাওয়া আসা করে। বর্ষার সময় স্কুল-কলেজ,অফিস-আদালত,হাট-বাজার বা হাসপাতালে যাতায়াতে এসব এলাকার মানুষদের একমাত্র ভরসা নৌকা। একটি ব্রীজের অভাবে এ অঞ্চলের মানুষের দুঃখ দূর্দশার শেষ থাকে না। তাদের দীর্ঘদিনের দাবী ঋষির ঘাটের একটি ব্রীজের।
সরেজমিনে ঋষির ঘাটে গিয়ে জানাযায়,বর্ষাকালে করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে নদীর ওপারের তিনটি গ্রাম এবং দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার দুটি ইউনিয়নের মানুষসহ এপারের ৫০ থেকে ৬০ টি গ্রামের মানুষ দু’তিন উপজেলায় যাতায়াত করে থাকেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে পার হতে হয়।অসুস্থ কোনো রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয় না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। মাঝেমধ্যে অনেক শিশু শিক্ষার্থীরা দূর্ঘটনার শিকার হন। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপের কারণে এসব এলাকায় তেমন কোন ভালো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে না।কৃষকদের উৎপাদিত ফসল শহরে নিতে না পেরে গ্রামেই কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে সচেতন এলাকাবাসী জানান, করতোয়া নদীর উপর ঋষির ঘাটের এ ব্রীজটি নির্মাণ হলে এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গতি ফিরবে বলে তাদের অভিমত।
এ ঘাটের ইজারাদার মন্টু জানান,আমার দাদা এই খেয়া ঘাট ইজারা নিয়ে তার জীবন নির্বাহ করেছেন। এরপর আমার বাবা,তারপর বতর্মানে আমি এই ঘাটের ইজারা নিয়ে নৌকায় মানুষ পারাপার করছি। কেউ নগদ টাকা, কেউ ফসল কেটে ধান-চাল ভাড়া হিসেবে দিয়ে থাকেন।
কিশোরগাড়ী ইউপির আকালু জানান, তিনি ছোট বেলা থেকে শুনে আসছেন ঋষির ঘাটে সেতু হবে, হচ্ছে করে আজও হয়নি। তাদের বাপ-দাদারাও তা-ই শুনেছেন।
তেকানী গ্রামের বাবলু মিয়া জানান, বর্ষাকালে নদী ভরে যায়। এসময় এসব এলাকার মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকে না।বিশেষ করে রোগীদের নিয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বর্ষামাসে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হয়।
কাশিয়াবাড়ী স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান,সেতুর অভাবে নৌকায় নদী পারাপারে কি যে কষ্ট তা ভাষায় প্রকাশ করে বুঝানো যাবে না। নৌকায় উঠতেও প্যান্ট গুটিয়ে,স্যান্ডেল হাতে নিয়ে, বই বগলদাবা করে নদী পারাপার করতে হয়। একবার পা পিছলে গেলে জামা-কাপড় বই সব নষ্ট হয়ে যায়,সেদিন আর স্কুলে যাওয়া হয় না। নৌকার জন্য ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। একারণে সময় মত ক্লাশে উপস্থিত হতে পারি না।
কিশোরগাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর জানান, ব্রীজটা আসলে এ এলাকার মানুষের খুবই প্রয়োজন। আমিও ঋষির ঘাটের এ ব্রীজটি নির্মাণর দাবী জানাচ্ছি।
উপজেলা প্রকৌশলী শাহারিয়ার জানান,করতোয়া নদীর দুই পাশে কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের বহু মানুষের বসবাস। তাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে মাননীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে পরামর্শ করে সেতুটি নির্মাণের প্রাথমিক যাচাইবাছাই করে হেড অফিসে তথ্য পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply