সোনাতলা সংবাদ ডটকম ডেস্কঃ বগুড়ায় মায়ের পরকীয়া প্রেমিকের হাতে তাহসিন (১০) নামে এক স্কুলছাত্র খুন হয়েছে। বুধবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাহসিন মারা যায়।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তাহসিনকে মারধরের ঘটনায় গুরুতর আহত হয় সে। পরে তাকে শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তাহসিন বগুড়া শহরের গোদরপাড়া পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে এবং স্থানীয় ব্রাইট স্টার কেজি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র।সূত্র- কালবেলা
নিহত তাহসিনের বাবা আব্দুল কুদ্দুস জানান, প্রায় এক যুগ আগে দুপচাঁচিয়ার তাসলিমা বেগমকে বিয়ে করেন তিনি। তাদের সংসারে তাহসিনসহ তিন সন্তান আছে। প্রায় বছর তিনেক আগে প্রতিবেশী দাদন ব্যবসায়ী আমিনুরের সঙ্গে তার স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সময় সালিশ বসিয়েও ব্যাপারটি মীমাংসা করা যায়নি। একপর্যায়ে কুদ্দুস এক বছর তিন মাস আগে তার স্ত্রী তাসলিমাকে তালাক দেন। এরপর থেকে তিন সন্তানকে নিয়ে কুদ্দুস নিজের বাড়িতে এবং তাসলিমা তার বাবার বাড়িতে থাকতেন।
তিনি আরও জানান, গতকাল সকালে তাসলিমা সন্তানদের দেখতে গোদারপাড়ায় তাদের বাড়িতে আসেন। সকাল ৭টার দিকে তার মা কুলসুম বেগম বাড়ি থেকে তাসলিমাকে বের করে দেন। এ সময় আমিনুর ও তার স্ত্রী শোভা তাসলিমাকে দেখতে পেয়ে গালাগাল শুরু করেন এবং তারা তার মা কুলসুমকে মারধর শুরু করেন। টের পেয়ে সে তার মাকে উদ্ধার করতে গেলে আমিনুর ও শোভা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের ডাক দেন। প্রায় আট থেকে ১০ জন মিলে আমিনুর ও শোভার পক্ষ নিয়ে তাকে ও তার মা কুলসুমকে মারধর করতে থাকেন।
এর মধ্যে কুদ্দুসের মেজ ছেলে তাহসিন সেখানে গেলে আমিনুর বাঁশ জাতীয় লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাহসিনকে উদ্ধার করে তার বাবা কুদ্দুস শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমিনুর নিজে বাঁশ দিয়ে আমার ছেলের মাথায় আঘাত করে। আমার ছেলের মাথার মধ্যে বাঁশ ঢুকে ছিল। অনেক কষ্ট পেয়ে বাচ্চাটা আমার মারা গেল। আমার সংসার আমিনুর শেষ করে দিয়েছে, তার অনেক টাকা; আমি অনেক বিচার দিয়েও বিচার পাইনি।’
বগুড়া জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরাফত ইসলাম জানান, হত্যার ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। তাহসিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শজিমেক হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
Leave a Reply