মুহাম্মাদ আবু মুসাঃ ঢাকঢোল পিটিয়ে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় পূর্ব বগুড়া তথা গাবতলীর ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ সন্ন্যাসী ও জামাই মেলার পর ১৬ফেব্রæয়ারী/২৩ বৃহস্পতিবার মহিষাবান দেবউত্তর মধ্যপাড়া ও রানিরপাড়া গ্রামে পৃথকভাবে বউ মেলা সম্পন্ন হয়েছে। এই মেলায় শুধু তরুণী, গৃহবধুসহ সব বয়সের মেয়েরা কেনাকাটা করে থাকে। পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ থাকায় সব বয়সের মেয়েরা স্বাচ্ছন্দে মতে কেনাকাটা করেছে। মহিষাবান দেবউত্তর মধ্যপাড়ায় প্রায় ২৪বছর আর রানিরপাড়া গ্রামে প্রায় ১৩বছর পূর্বে থেকে ব্যক্তি মালিকায় স্বল্প পরিসরে জমিতে বউ মেলা হয়ে আসছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহজাহান আড়ৎদারের নেতৃত্বে মহিষাবানে এই বউ মেলাটি হয়। তিনি (শাহজাহান) মৃত্যুর পর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম মেলাটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অপর দিকে রানিরপাড়া গ্রামে যুবলীগ নেতা সুলতান মাহমুদ মেম্বার মেলাটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাছাড়াও এলাকার কিছু ব্যক্তিবর্গ বউ মেলা পরিচালনায় সহযোগিতা করে থাকেন। তবে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পোড়াদহ মেলার লাইসেন্স হলেও বউ মেলার কোন লাইসেন্স বা অনুমোদন ছাড়াই হচ্ছে। বউ মেলায় আসা গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পান্তাপাড়া এলাকার তরুনী রওশন আরা, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার শিহিপুর গ্রামের আদরী আকতার, সারিয়াকান্দি উপজেলার জোড়গাছা এলাকার তরুনী জান্নাতী খাতুন ও গাবতলীর বালিয়াদিঘী গ্রামের গৃহবধু উম্মে কুলসুম জানান, এই মেলায় পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ থাকায় আমরা স্বাচ্ছন্দে মতে কেনাকাটা করেছি। উপজেলার কুটামহিন গ্রামের আয়শা বেগম জানান, আমরা প্রতি বছরই এই মেলায় এসে কেনাকাটা করে থাকি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এ মেলায় গৃহবধু, তরুনী ও শিশুদের ছিল উপচেপড়া ভীড়। এই মেলায় বিভিন্ন ধরনের শতাধিক দোকানপাট ছিল। মেলার মূল আকর্ষণ ছিলো তরুনীদের জন্য কসমেটিকস, গৃহবধূদের জন্য সাংসারিক জিসিনপত্র আর শিশুদের জন্য নাগরদোলা ও বিভিন্ন খেলনা। মূলত পোড়াদহ মেলাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় উৎসবের আমেজ বইছে। যা মেলার আগে এবং পরে সপ্তাহব্যাপী এই আমেজ থাকে। পৃথক ২টি বউ মেলায় দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম ও অপরটিতে যুবলীগ নেতা সুলতান মাহমুদ মেম্বার এর সাথে কথা বললে তারা জানান, ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মেলাটি সম্পন্ন হচ্ছে। এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, পোড়াদহ জামাই মেলার পরেরদিন দীর্ঘ কয়েক বছর হলে বউ মেলা হয়ে আসছে। স্থানীয়রা এই ঐতিহ্য ধরে রাখেছে। তবে আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মানুষের জান মালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল, রয়েছে এবং থাকবে।
Leave a Reply