কাহালু (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ কাহালু উপজেলার পাঁচপীর মাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দশম শেণির এক ছাত্রীকে ক্লাশে ঢুকতে না দেওয়ায় অভিযোগের খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে দেনদরবার ও আলোচনা-সমালোচনা এখনো থেমে নেই। অভিযোগ উঠেছে ক্লাশে ঢুকতে না দেওয়া ছাত্রীকে হুমকি দেওয়াসহ বিষয়টি আপোষ-মিমাংশার জন্য তাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এদিকে গতকাল রোববার ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে লক্ষ করা গেছে ওই ছাত্রীর এক ফুফা ও দাদীকে ডেকে আনা হয়েছে বিষয়টি মিমাংশার জন্য। বিষয়টি মিমাংশার জন্য ছাত্রীকে চাপ সৃষ্টি ও তার হাত ধরে টানাটানি করছে তার দাদী। এই পরিস্থিতিতে লক্ষ করা গেছে সৃষ্ট ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্কুলের শিক্ষার পরিবেশের কিছুটা বিঘœ ঘটছে।
অভিযোগকারী ছাত্রী জানান, সম্প্রতি তার এক বান্ধবী অসুস্থ্য হলে তাকে পাশ্ববর্তী একটি বাড়িতে তারা যায়। সেখানে অসুস্থ্য ছাত্রী অভিযোগকারী ছাত্রীর শরীরে মাথা রেখে একটু বিশ্রাম নেন। এসময় পাঁচপীর মাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান সেখানে গিয়ে ওই দুই ছাত্রীকে স্কুলে আসতে বলেন। অভিযোগকারী ছাত্রী স্কুলে গেলে তাকে ক্লাশে ঢুকতে না দিয়ে অভিভাবককে ডেকে আনতে বলে। ছাত্রী আরও জানান, প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়ার জন্য তাকে ক্লাশে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
যারফলে ওই ছাত্রী প্রথমে থানায় গেলে পুলিশের পরামর্শে ওইদিন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ করে। ছাত্রী এই প্রতিবেদকের কাছে জানান, অভিযোগ করার পর তাকে পাঁচপীর এলাকায় দুজন যুবক চাকু দেখিয়ে হুমকি দেয় যা হয়েছে এইটুকুর মধ্যেই থাকো। বেশী বাড়াবাড়ি করলে তোমার খবর আছে। এই ঘটনার পর আবারও দুই যুবক তাকে হুমকি দিয়েছে। ছাত্রীর মতে তার মত আর কোন ছাত্রীকে এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে না হয়, তার জন্য সে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দাবী জানায়।
গতকাল স্কুলে আসা ছাত্রীর ফুফা জানান, প্রধান শিক্ষক বিষয়টি আপোষ-মিমাংশার জন্য আমাদেরকে ডেকেছেন। ছাত্রীর মা নেই, বাবা একটু পাগল টাইপের তাই আমি এবং আমার শাশুড়ী এখানে এসেছি। তিনি জানান, বিষয়টির সুষ্ঠ সমাধান চাই আমরা। ভবিষ্যতে তার ভাতিজিকে এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে আর যাতে পড়তে না হয়।
জানা গেছে এই বিদ্যালয়ের বর্তমানে ম্যানেজিং কমিটি নেই। ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রেও অনেকটা সমস্যা দেখা দিয়েছি। ছাত্রীকে ক্লাশে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগটি বেশ আলোচিত হয়েছে। অনেকের মতে ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় নানা সমস্যা ও সৃষ্ট ঘটনা ক্রমেই জটিল আকার ধারণ করছে। সৃষ্ট ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়াসহ এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ স্বাভাবিক রাখার দাবী জানান অনেকে।
পাঁচপীর মাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, আমি দশম শ্রেণির কাউকে প্রাইভেট পড়ায় না। নবম শ্রেণির ছাত্রীদের বাড়তি পড়ানো হলেও তাদের কাছ থেকে কোন টাকা নেওয়া হয়না। ছাত্রীকে ক্লাশে ঢুকতে না দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি জানান, ক্লাশে ঢুকতে দেওয়া হবেনা এই কথা বলা হয়নি। ঘটনার দিন আমি তার অভিভাবককে স্কুলে আনতে বলেছি। তিনি আরও জানান, বিষয়টি মিমাংশা করা হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোতাহার হোসেন জানান, ছাত্রীর অভিযোগটি তদন্ত করা হয়েছে। তদন্ত রিপোট জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হচ্ছে। সৃষ্ট ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার পরিবেশের বিঘœ যাতে না ঘটে সেই ব্যপারে আমরা নজর দিচ্ছি।
Leave a Reply