সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সোনাতলায় ১৩ বছরের নাবালিকা মেয়েকে বিবাহ দিয়ে স্থানীয়গন্যমান্য ব্যক্তিরা ধর্ষণের চেষ্টা অভিযোগ থেকে উদ্ধার করলো অভিযুক্তকে। এঘটনায় ভুক্তভোগী নাবালিকার মামা জিল্লুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বাদি হয়ে সোনাতলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। গত ২৯ জুলাই শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার পাকুল্যা ইউনিয়নের হুয়াকুয়া (মন্ডলপাড়া) গ্রামে এঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাকুল্যা ইউনিয়নের হুয়াকুয়া (মন্ডলপাড়া) গ্রামের মোঃ বাবুল মন্ডলের ছেলে জিল্লুর রহমান তার পরিবার পরিজন নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করে। এদিকে জিল্লুরের বোনের স্বামী মারা যাওয়ায় তার বোন ও ভাগ্নি (১৩) জিল্লুরের পরিবারের সাথেই থাকে। প্রতিদিনের ন্যায় গত ১৯ জুলাই শনিবার রাতের খাবার খেয়ে অনুঃ ৯টায় সুয়ে পরে। জিল্লুরের বৃদ্ধ বাবার সাথে তার ভাগ্নি (১৩) একই ঘরে ঘুমাতো।
এমতাবস্থায় পাশের বাড়ির মিজানুর মন্ডলের ছেলে মিরাজ (১৯) রাতের আঁধারে জিল্লুরের বাড়িতে গিয়ে তার বাবার শয়নঘড়ে ঢোকে। এরপর মিরাজ জিল্লুরের নাবালিকা ভাগ্নির মুখ চেপে ধরে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে জিল্লুর ও তার পরিবারের সদস্যরা তার নাবালিকা ভাগ্নিকে ঘরে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি ও চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। এতে মিরাজ কৌশলে জিল্লুরের নাবালিকা ভাগ্নিকে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
এসময় জিল্লুরের নাবালিকা ভাগ্নি (১৩) তার পরিবারের সদস্যদের বলে মিরাজ জোড়পুর্বক তাকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং চাকু দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে।
অপরদিকে জিল্লুর রহমান তার ভাগ্নির কাছ থেকে সবকিছু সুনে এ কার্যকলাপ সম্পর্কে মিরাজের নিকট জানতে চাইলে মিরাজ বিভিন্ন প্রকার তালবাহানা মুলক কথাবার্তা বলে এবং কোন প্রকার থানা পুলিশ করলে বড় ধরনের ক্ষতি করবে বলে হুমকি প্রদান করে। মিরাজ এর আগেও জিল্লুরের নাবালিকা ভাগ্নিকে বিভিন্নভাবে বিরক্ত করতো বলেও তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন।
এঘটনায় স্বরেজমিনে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টাকারীর পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বললে তারা ঘটনাটি অস্বীকার করে সেটি আড়াল করার চেষ্টা করে। অপরদিকে মেয়ের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বললে তারা ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করেন। তারা বলেন, ৩০ জুলাই রাতে আমরা ঘরোয়াভাবে শালিশ বৈঠক করি এবং সেখানে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর প্রায় মাঝরাতে মধুপুর ইউনিয়ন এলাকা থেকে কাজী এনে ছেলে ও মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি এলাকার স্থানীয় মেম্বারসহ আরো অনেকেই জানেন। এসময় থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন এসআই নাজিম স্যার বাড়িতে এসেছিলেন এবং তিনি নিজেই আমাদের এভাবে মিমাংসার কথা বলে গেছেন।
এবিষয়ে সোনাতলা থানার এসআই নাজিম উদ্দিন এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে গতকাল ঘটনাস্থল তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। এদিকে আজকে বাদীপক্ষ থানায় এসে জানায় তারা ছেলে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। তবে আইনগতভাবে দায়েরকৃত অভিযোগটি এখনো তুলে নেননি তারা।
এদিকে থানার অফিসার ইনচার্জ সৈকত হাসানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন অভিযোগের বিষয়টি আমি জানিনা। এদিকে থানার এসআই নাজিম উদ্দিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার জানা নেই তার নিকট থেকে সুনে জানাচ্ছি। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি আর যোগাযোগ করেননি।
Leave a Reply