আব্দুর রাজ্জাক, সোনাতলা অফিসঃ বগুড়ার সোনাতলায় কর্পুর দ্বি পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়ে মারপিটের ঘটনা ও ৯ম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীর স্কুল ব্যাগ থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত ২৯ আগষ্ট রোববার বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতিকে অজ্ঞাত রেখে শালিশে মুচলেকায় মিমাংসা করে উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট জব্দ রাখা হয়েছে।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, সোনাতলা উপজেলার দিগদাড় ইউনিয়ন এলাকার কর্পুর দ্বি পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর ছাত্র মোঃ আবিদ হাসান প্রতিনিয়তই বিদ্যালয়ে স্কুল ব্যাগে অস্ত্র নিয়ে আসতো। যার প্রভাবে অত্র বিদ্যালয়ের সহপাঠীদের সাথে খারাপ আচরনসহ বিভিন্ন সময়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে কথাবার্তা বলতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৯ আগষ্ট রোববার আবিদ হাসান তার স্কুল ব্যাগের ভেতরে দেশীয় অস্ত্র (চাইনিজ কুড়াল, রাম দা, চাকু, সাইকেলের চেইন) নিয়ে বিদ্যালয়ে আসে। ওইদিন টিফিন সময়ে সে তার সহপাঠীদের সাথে পুর্বের কোন এক বিষয় নিয়ে তর্ক বিতর্ক করে এবং অস্ত্রের ভয় দেখায়। এক পর্যায়ে তার সহপাঠীরা ভয়ে মোবাইল ফোনে এলাকার বড় ভাইদের ডেকে নেয়। তারা প্রধান শিক্ষককে অবগত না করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিষয়টি শোনে। এরপর তাদের সহযোগিতা নিয়ে আবিদ হাসানের স্কুল ব্যাগ থেকে দেশীয় অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট জমা দেন। এসময় ৯ম শ্রেনীর কিছু শিক্ষার্থীরা আবিদ হাসানকে মারধরও করে।
অপরদিকে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষকগন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্য ও ৯ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী আবিদ হাসানের অভিভাবককে খবর দেয়। খবর পেয়ে ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্য ও অত্র বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী আবিদ হাসানের অভিভাবক বিদ্যালয়ে গেলে ওইদিন বিকেলে তাদেরকে নিয়ে একটি শালিশ বৈঠক হয়। শালিশ বৈঠকে একটি মুচলেকা লিখে সকলের স্বাক্ষর সহ শিক্ষার্থী আবিদ হাসানকে শাসনমুলক চর থাপ্পর মেরে বিষয়টি সমাধান করেন। একই সাথে আবিদ হাসান কর্তৃক বিদ্যালয়ে আনা অস্ত্রগুলো প্রধান শিক্ষকের নিকট জব্দ রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন ঘটনার দিন অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে শালিশ বৈঠক করে মীমাংসা করা হয়েছে। এসময় একটি লিখিত কাগজ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। এছাড়াও অস্ত্রের কথা স্বীকার করলেও সেই অস্ত্রগুলো তিনি দেখাতে রাজি হন নি।
এবিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির জনৈক এক সদস্যের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ঘটনা সত্য এবং এঘটনায় বিদ্যালয়ে শালিস বৈঠক হয়েছে। তিনি আরো বলেন উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে জব্দ রাখা হয়েছে।
বিষয়টি অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অবগত আছে কিনা জানতে চাইলে জনৈক শিক্ষক রাগান্বিত হয়ে বলেন, তাকে জানানোর প্রয়োজন নেই , ঘটনা বড় হলে অবশ্যই তাকে জানানো হতো। সবকিছুই তাকে জানাতে হবে এমন কোন কিছুর নিয়ম নেই।
এবিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ নজমুল ইসলাম এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে ওই বিদ্যালয়ের কেউ আমাকে জানাননি, আপনার কাছ থেকেই আমি প্রথম শুনলাম। তবে এধরনের ঘটনা ঘটলে অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে অবশ্যই অবগত করতে হবে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এছাড়াও তিনি বলেন আমি বিষয়টি খোজ নিয়ে দেখবো।
এ ঘটনায় থানার অফিসার ইনচার্জ সৈকত হাসানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই আপনার কাছ থেকেই শুনলাম। তবে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Leave a Reply